তুলসী পাতার উপকারিতা এবং তার ওষুধি গুনাগুন

Rate this post

আমাদের সমাজে হিন্দু সম্প্রদয়ের কাছে এই তুলসী হলো একটি পবিত্র উদ্ভিদ, যাকে পুজো অর্চনা করা হয়ে থাকে, তবে তারই সাথে এই ওষুধি সম্পূর্ণ উদ্ভিদ টির অনেক গুনাগুন রয়েছে। প্রাচীন যুগ থেকেই তুলসী পাতার উপকারিতা আমরা পেয়ে আসছি এবং এটি কে বিভিন্ন ভাবেই প্রয়োগ করা হয়ে থাকে আমাদের সাস্থ ভালো রাখার ক্ষেত্রে। 

তুলসী পাতার উপকারিতা

আমরা জানি যে তুলসী (Holy Basil) একটি ওষধি গাছ যার কোনো তুলনা নেই, তুলসী গাছ টি লামিয়াসি পরিবারের একজন সদস্য, এবং এর পাতা থেকে একটি ঝাঁজালো সুগন্ধ আসে থাকে। জানলে অবাক হতে হয় যে এই গাছ টি প্রচুর পরিমানে অক্সসিজেন সরবরাহ করা থাকে, তাই এই তুলসী গাছ কে অক্সসিজেনের ভান্ডার ও বলা হয়ে থাকে। 

আগে কার সময়ে মানুষ আধুনিক চিকিৎসার আগে বিশ্বাস করতো ভেষজ ঔষধে, আর তুলসী একটি আয়ুর্বেদিক ভেজষ, এটি কিছু অতি মারাক্তক রোগ যেমন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, এমন কি ক্যান্সার কেউ সারাতে বেশ কার্যকরী। 

তুলসী পাতার উপকারিতা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী সেটি কে লক্ষ করেই আজ বঙ্গজ্ঞান নিয়ে এসেছে আজকের এই পোস্ট টি, এখন থেকে আমরা তুলসী পাতা সম্মন্ধে যাবতীয় সব গুনাগুন গুলি নিয়ে আলোচনা করে নেবো। 

তুলসী পাতা খাবার নিয়ম 

প্রথমেই আমাদের মনে এই প্রশ্ন টি থেকেই যে এই তুলসী পাতা টিকে আমরা কিভাবে খাবো, তুলসী পাতার উপকারিতা সঠিক ভাবে পেতে চাইলে এটি সকালে খালি পেতে খেয়ে দেখতে পারেন। চায়ের মধ্যে ২-৩ তে তুলসী দিয়ে ফুটিয়ে খাওয়া যেতে পারে, এটি তে খুবই সুন্ধর একটা গন্ধ ও আসে এবং আপনার সাস্থের জন্য ভালো কাজ করে। 

অন্য উপায় গুলি হলো শুধু গরম জলে কিছুক্ষন রেখে সেই জল টি পান করা এতেও খুব লাভ হয়ে থাকে, তবে বাচ্ছা থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ দের আজকাল সর্দি কাশি লেগেই রয়েছে সেক্ষেত্রে অবশ্য এই তুলসী পাতা বেঁটে এক চামচ মতো রস খেলে খুবই উপকার পাওয়া যাই। 

তুলসী পাতার উপকারিতা এবং তার গুনাগুন 

  • প্রচন্ড গরমে বা ঠান্ডায় বেশি বাইরে ঘুরলে বা অনেক কারণে চোখ উঠে থাকে আর এই রোগ টি সক্রামণ, এটি বাড়ির একজনের হলে বাকি সবাড়ির ও হয়ে থাকে, এই সময় তুলসী পাতার রস চোখে কাজলের মতো প্রলেপ দিয়ে পরিয়ে দিলে চোখ ওঠা খুব তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাই এবং চোখে বেথা, চোখ দিয়ে ঘন ঘন জল পড়া এই গুলিও অনেক কমে যাই। 
  • যেসব ব্যাক্তি দাঁতের ব্যথায় খুব ভুগছেন তারা এই তুলসী পাতা এবং লবঙ্গের একটি পেস্ট তৈরী করে নিয়ে সেই ব্যথা জায়গা টি তে চেপে ধরলে ওই ব্যথা থেকে অবাক আরাম পাওয়া যাই। 
  • শীতকালে বা ঠান্ডা লাগার জন্য অনেক সময় ভীষণ গলা ব্যথা হয়ে থাকে, যেকোনো ঠান্ডা অসুখের জন্য তুলসী পাতা খুবই উপকারী, এই ক্ষেত্রে তুলসী পাতা কে জলে ভালো ভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে এবং তার পর সেই জল দিয়ে গার্গল করলে অনেক অংশে আরাম পাওয়া যাই।  
  • মরণঘাতী ক্যান্সার এর মতো অসুখ কেউ দূরে রাখতে সাহায্য করে থাকে এই তুলসী পাতা, এই পাতার মধ্যে পাওয়া যাই, ফাইটোকেমিক্যাল, লিউটিউলিন, এপিজেনিন, রেডিওপ্রটেক্টিভ, মাইরেটিনাল মতো উপাদান যা ক্যান্সার এবং টিউমারের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করে থাকে। ব্রেস্ট ক্যান্সার সারিয়ে তুলতে এবং অনেক সময়ে অগ্নাশয়ে টিউমার দেখা দেয় সেক্ষেত্রেও তুলসী পাতার জুড়ি মেলা ভার। 
  • প্রাচীন কাল থেকে এখনো ঠান্ডা, সর্দি, জ্বর হলে তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম আছে, ঠান্ডা জনিত যেকোনো রোগ হলেই তুলসী পাতার রস এবং মধু একসাথে খেলে অনেক আরাম পাওয়া যাই। 
  • তুলসী পাতা পেটের কৃমি কে রোধ করতেও অনেক বেশি সক্ষম, এছাড়াও যখন জন্ডিস হয়ে থাকে তখন এই পাতা জল দিয়ে বেঁটে খেলে জন্ডিস এর জন্য যে হদুল বর্ণের সৃষ্টি হয় তা কেটে যাই, এবং রোগী খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠে। 
  • যারা ওজন নিয়ে ভুগছেন তারা এই তুলসী পাতা ব্যবহার করে দেখতে পারেন, তুলসী পাতা ওজন ও অনেক হরে কমিয়ে দিতে পারে, সকালে খালি পেটে তুলসী পাতা দিয়ে ফোটানো জল পান করতে হবে। 
  • রোগ প্রতিরোধক হিসাবেও তুলসী পাতার উপকারিতা অনেক বেশি, যেকোনো রোগ, শরীর খারাপ হলেই আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পরে, ক্লান্ত ভাব থাকে, এগুলি দূর করতে তুলসী পাতা ভীষণ ভাবে সক্ষম। 
  • বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস নেই এমন এমন খুঁজে পাওয়া মুশকিল, এই সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের নিয়মিত ওষধ ও খেয়ে যেতে হয়, তুলসী পাতা ইন্সুলিন উৎপাদনে সাহায্য করে থাকে, তাই আপনি যদি প্রতিদিন ২-৩ তে তুলসী খাওয়ার অভ্যেস টি শুরু করতে পারেন তাহলে আপনি অনেক বেশি উপকার পাবেন। 

  • কুলেখাড়া পাতার উপকারিতা

তুলসী পাতার অপকারিতা 

তুলসী পাতার উপকারিতা সাথে সাথে তার বিপরীত দিক টিও আমাদের দেখা উচিত এবং সেই সব বিষয় গুলির থেকে সাবধান হওয়া খুবই দরকার। 

  • কোনো কিছুই বেশি খাওয়া একদমই উচিত নয়, তেমনি হলো এই তুলসী পাতা, যদি এই পাতা বেশি খেয়ে নিন, তাহলে শরীরে রক্ত প্রবাহের মাত্রা কে বাড়িয়ে দিতে পারে ফলে শরীরে স্বাভাবিক ভাবে রক্ত জমাট এর প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে যাই, তারজন্য দেখা দিতে পারে অতিরিক্ত রক্তপাতের সমস্যা। 
  • যেকোনো সার্জারির আগে এবং পরে ওষুধ চলা কালীন এই তুলসী পাতা খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। 

 

একনজরে : আজকে এই পোস্ট থেকে আমরা কি কি জানলাম 

প্রথমেই আমরা জানলাম যে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য তুলসী পাতার উপকারিতা কিভাবে আমাদের কাজে লাগে এবং তারপর তুলসী পাতার উপকারিতা সাথে সাথে তার কিছু পার্শপ্রতিক্রিয়া সম্বন্ধেও জেনে নিলাম। 

আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে আপনি তুলসী পাতার উপকারিতা নিয়ে যাবতীয় তথ্য জানতে পেরেছেন , এছাড়া তুলসী পাতার উপকারিতা আমাদের শরীরে কিভাবে কাজ করে বা এই বিষয়ে  আরো কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনাদের কমেন্ট আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান যেখান থেকে আমরা আরো মোটিভিশন পাই। 

আমাদের আজকের এই পোস্ট টি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই  আপনাদের প্রিয়জন বা বন্ধু দের  সাথে  শেয়ার করতে পারেন।  আর এরকম নিত্যনতুন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ব্লগের সাথে যুক্ত থাকুন, এবং আমাদের সহযোগিতা করতে থাকুন। 

ধন্যবাদ  

বঙ্গজ্ঞান টিম

শেয়ার করুন:

নমস্কার , বঙ্গজ্ঞান ওয়েবসাইটে আপনাদের স্বাগত , আপনাদের বিভিন্ন বিষয়ে যেমন ব্যবসা , ক্যারিয়ার , কম্পিউটার জ্ঞান , ইন্টারনেট ইত্যাদির উপর আমরা তথ্য নিয়ে আসি প্রতি সপ্তাহে সোমবার এবং শুক্রবার । আমাদের উদ্দেশ্য আপনাদের সবার কাছে বাংলা ভাষায় সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া।

Leave a Comment