আপেল সিডার ভিনেগারের নাম এখন কিন্তু খুবই জনপ্রিয়, প্রায় আমরা অনলাইন এ অথবা বাজারে এই জিনিস টি দেখতে পাই এবং ব্যবহার ও অনেকেই করে থাকেন, তবে আমাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষই এটা জানে না যে এই আপেল সিডার ভিনেগার আসলে কি, আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা কি হতে পারে এবং এটি কতটুকু বা কিভাবে খেতে হবে।
এই ভিনেগার টি আপেল এর যে জুস হয় সেটি থেকেই মলূত তৈরী, আপেলের জুস এর মধ্যে পাওয়া যাই প্রাকৃতিক চিনি যেটি ধীরে ধীরে ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আলকোহলে পরিণত হয় এবং তারপর ওই আলকোহোল থেকে এক ধরণের আসিটিক এসিডের সৃষ্টি হয় সেটি ই হলো এই আপেল সিডার ভিনেগার।
আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা
আপেল সিডার ভিনেগার এর স্বাদ অনেক টা ঝাঁজালো এবং গন্ধযুক্ত হয়ে থাকে, এর মধ্যে বিভিন্ন প্রোটিন এর সাথে সাথে কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যাই। আপেল সিডার ভিনেগারে মলূত ৯৫% জল, ৪% এসিডিক এসিড এছাড়াও কার্বোহাইড্রেড, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্স ইথ্যাদি বর্তমান। এই ভিনেগারটি অনেকে ওষুধের মতো ও ব্যবহার করে থাকে, মেডিসিনের জনক হিপোক্রেটিস এটি কাশি চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করতেন, প্রাচীন যুগে এটি খাদ্যের মসলা এবং খাদ্যের সংরক্ষণ করি হিসাবে ব্যবহার করা হতো, এমন কি আপেল সিডার ভিনেগার কে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ক্ষত উপরে লাগানো হতো তাড়াতাড়ি ঠিক করার জন্য এবং এটি জীবাণুনাশক হিসাবেও বেশ সহায়তা করতো।
আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা অনেক সেটি কে লক্ষ্য করেই আজ বঙ্গজ্ঞান নিয়ে এসেছে আজকের এই পোস্টটি এখানে থেকে এই আপেল আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা এবং এর সম্মন্ধে আরো কিছু উল্লেখযোগ্য বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করবো তাহলে চলুন আজকের এই পোস্টটি শুরু করা যাক।
সুচিপত্র
আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা এবং তার যত গুনাগুন
- যেসব ব্যাক্তিদের হজমের সমস্যা আছে তাদের জন্য এই আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা অনেক ভালো ভাবে কাজে দেবে কারণ খাবার হজম এর জন্য যে সব ধরণের এনজাইম বা সোজা কোথায় যে সব এসিডের দরকার পরে আপেল সিডার ভিনেগার সেইসব এসিডের পরিমান বাড়াতে সাহায্য করে ফলে যে খাবার খেলে আপনার অনেক পরে হজম হতো সেটি কে তাড়াতাড়ি হজম করতে খুবই সাহায্য করে থাকে।
- এই আপেল সিডার ভিনেগার টি মলূত জনপ্রিয় হয়ে উঠার কারণই হলো যে এটি ওজন কমাতে পারে, এবং এটি কিন্তু একদম সত্যি, যদি সঠিক পরিমানে এবং সঠিক নিয়ম মেনে এই ভিনেগার টি খান তাহলে অবসসই আপনার ওজন কমবে। তবে সাথে সাথে কিন্তু নিয়মিয় ব্যায়াম, স্বাস্থকর খাবার দাবার, এই সব কিন্তু করে যেতে হবে তবেই এর রেজাল্ট আরো ভালো পাবেন।
- কোনো ব্যাক্তির যদি টাইপ ২ ডায়াবেটিস থাকে তাহলে আজ থেকেই এই ভিনেগার টি খাওয়া শুরু করে দিতে পারেন কারণ এটি টাইপ ২ ডায়াবেটিস কে সরিয়ে তুলতে অনেক খানি সাহায্য করে থাকে, এবং ভবিৎষতে সুগার এর মতো রোগ হওয়া থেকে আপনাকে বাঁচায়।
- আপেল সিডার ভিনেগারকে জীবাণুনাশক হিসেবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে বিভিন্ন রকমের সংক্রমণ, ক্ষত পরিষ্কার এই রকম এ সেটি এন্টিবায়োটিকের মতো কাজে দেয়।
- আপেল সিডার ভিনেগার খেলে আমাদের হার্ট ও খুব ভালো থাকে, কোলেস্টরল কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে তার সাথে উচ্চ রক্তচাপ কেউ, এছাড়া হাই ব্লাড পেসারের জন্য যে হৃদ রোগের ঝুঁকি থাকে তা অনেক অংশে কমিয়ে দিতে সাহায্য করে থাকে।
- আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা আমাদের ত্বকের জন্যও বেশ কার্যকরী, আপনার যদি পিগমেন্টেশন বা ব্রণ থাকে তাহলে এটি জলে সাথে মিশিয়ে আপনি আপনার তোকে ব্যবহার করতে পারেন, অনেক উপকার পারেন এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।
- চুলের জন্য ও কিন্তু বেশ উপকারী এই আপেল সিডার ভিনেগারটি, চুল যদি ভালো রাখতে চান তাহলে একদম শ্যাম্পু কন্ডিশনার এর শেষ এ এটি কে কিছু তা জলে গুলে ব্যবহার করুন। এরফলে আপনার চুল আরো বেশি সিল্কি হবে, চকচকে করবে, চুলের খুশকি থাকলে সেটিও দূর হয়ে যাবে।
• দারুচিনির গুনাগুন এবং তার উপকারিতা
আপেল সিডার ভিনেগার এর ব্যবহার
আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা নিয়ে তো আমরা জানলাম তবে আমরা অনেকে জানিনা যে এর কত টুকু পরিমান আমরা খাবো যা আমাদের শরীরের জন্য ভালো এবং তা কিভাবে খাবো।
- আপেল সিডার ভিনেগার আপনি সারাদিনে সব থেকে বেশি হলে ২ টেবিল চামচ অব্দিই খেতে পারবেন, তবে ১ টেবিল চামচ হলেই সেটা আরো ভালো, প্রথমে দেখে নিন যে এক টেবিল চামচ ভিনেগার আপনার শরীরে কিভাবে প্রতিক্রিয়া নিচ্ছে সেই বুঝেই আপনি খাবেন।
- এবার প্রশ্ন হলো এটি কে খাবেন কিভাবে, এই ভিনেগার টি কে আপনি কখনোই শুধু শুধু খেতে পারবেন না যেহেতু এটি একটি এসিড ফর্মে থাকে তাই সমসময় আপনি এটি কে জলের সাথে মিশিয়েই খান, এক গ্লাস জলে সেটা নরমাল বা কুসুম গরম জল হতে পারে তার সাথে ১ টেবিল চামচ এই ভিনেগার মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- এই ভিনেগার টিকে আপনি সকালে খালি পেটেও খেতে পারেন আবার কোনো খাবার খাওয়ার আগে বা পরেও খাওয়া হয়ে থাকে তবে অবসসই সেটি যেন ৩০ মিনিট আগে এবং পরে যেন হয়।
- শুধু জলে মিশিয়ে ছাড়াও এই ভিনেগার টিকে আপনি সালাদ, ফলের সাথে, এবং কোনো জুস এর মধ্যে মিশিয়েও খেতে পারেন।
আপেল সিডার ভিনেগার এর অপকারিতা
আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা সাথে সাথে এর কিছু অপকারিতাও আছে যে বিষয়ে আমাদের সচেতন হাওয়া তাও দরকার।
- যাদের শরীরে পটাসিয়াম কমে যাওয়ার প্রবণতা থাকে তারা এই ভিনেগার খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলুন।
- যদি এই ভিনেগার খেলে কোনোরকমের এলার্জির দেখা দেয় তাহলে এটি খাওয়া সাথে সাথে বন্ধ করতে হবে।
- ডায়াবেটিস যাদের আছে এবং যারা দিনে দুবার ইন্সুলিন নেন তারা এই ভিনেগার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- কখনোই সরাসরি এই ভিনেগার খাওয়া উচিত নয়, ভিনেগার সবসময় কিছুর সাথে মিশিয়ে তবেই পান করুন।
- যাদের দাঁতের সমস্যা রয়েছে, দাঁত ক্ষয়ে যাওয়া, গর্ত হওয়া সেই সব ব্যাক্তি এই ভিনেগার খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলুন।
- যদি আপনার ইতিমধ্যে কোনোরকমের সার্জারি বা ওষুধ এন্টিবায়োটিক এ চলছেন তাহলে আপাতত এই ভিনেগার খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে, কারণ এই ভিনেগার হয় এসিড প্রকৃতির তাই সেই সময় খেলে কোনো রকম উল্টো প্রতিক্রিয়া হতে পারে তাই সেই সময় অব্দি এই আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
একনজরে : আজকে এই পোস্ট থেকে আমরা কি কি জানলাম
প্রথমেই আমরা জানলাম যে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা কিভাবে আমাদের কাজে লাগে এবং তারপর আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা সাথে সাথে তার কিছু পার্শপ্রতিক্রিয়া সম্বন্ধেও জেনে নিলাম।
আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে আপনি আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা নিয়ে যাবতীয় তথ্য জানতে পেরেছেন , এছাড়া আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা আমাদের শরীরে কিভাবে কাজ করে বা এই বিষয়ে আরো কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনাদের কমেন্ট আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান যেখান থেকে আমরা আরো মোটিভিশন পাই।
আমাদের আজকের এই পোস্ট টি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাদের প্রিয়জন বা বন্ধু দের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এরকম নিত্যনতুন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ব্লগের সাথে যুক্ত থাকুন, এবং আমাদের সহযোগিতা করতে থাকুন।
ধন্যবাদ
বঙ্গজ্ঞান টিম