আতা ফল অনেকে পছন্দ করে খেতে আবার অনেকেই পছন্দ করেন না, তার কারণ যে এতে প্রচুর বীজ থাকে ফলে এটি খেতেও একটু সময় লাগে, তবে আতা ফলের উপকারিতা কিন্তু অনেক টাই বেশি ভাবে লক্ষ্য করা যাই আমাদের স্বাস্থ্যের উপর। এই ফলটির ভেতরে ছোট ছোট অনেক কোষ থাকে এবং কোষ গুলির ভেতরে থাকে একটি করে বীজ, ওই বীজ কে ঘিরে থাকে নরম এবং রসালো অংশ টি ওই টি খাবারে উপযুক্ত।
আতা ফলের উপকারিতা
আতা ফলের ইংরেজি নাম Custard Apple, এটি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি এটি সকল প্রকার পুষ্টিগুণে ভুরপুর, আতা ফলে ভিটামিন বি ভীষণ পরিমানে লক্ষ্য করা যাই, যা আমাদের শরীরের মধ্যে ডোপামিনের উৎপাদন বাড়াতে ভীষণ পরিমানে সক্ষম।
আতা ফলের মধ্যে যেসব পুষ্টিগুণ পাওয়া যাই তা হলো, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, নিয়াসিন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, প্রোটিন, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেড, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন এ, সোডিয়াম, ও ফ্যাটি এসিডের মতো আরো উপকারী ভেষজ উপাদান।
আতা ফলের ফলের নাম হয়তো আমরা আরো অন্যান্য ফলের মতো বেশি শুনতে পাই না তবে এর গুনাগুন ভীষণ, তাই আজকে বঙ্গজ্ঞান নিয়ে এসেছে আতা ফলের উপকারিতা, যেখানে আমরা জেনে নেবো এই ফলটির বিষয়ে আরো বিশেষ কিছু তথ্য, তাহলে চলুন আজকের এই পোস্টটি শুরু করা যাক।
সুচিপত্র
মানব জীবনে আতা ফলের উপকারিতা
- আতা তে প্রচুর পরিমানে আয়রন পাওয়া যাই যাই যেসব ব্যাক্তি রা রক্ত শুন্যতায় ভুগছেন তারা এই আতা খেয়ে দেখতে পারেন, আপনার এই সমস্যা দূর হবে।
- পুষ্টিবিদরা মনে করেন আতা ফলের মধ্যে প্রচুর পরিমানে আন্টি অক্সসিডেন্ট এর মাত্রা পাওয়া যাই, এবং এটি ফ্লেবোনয়েড সম্মৃদ্ধ যা বিভিন্ন ধরণের টিউমার এবং ক্যান্সার কে দমন করতে সক্ষম। এবং এর মধ্যে থাকা আন্টি অক্সসিডেন্ট সরিয়ে মধ্যে যে ক্যান্সারের কোষ গুলি তৈরী হয় তার থেকে বাধা সৃষ্টি করে, ও এর এই ফলটির মধ্যে থাকা আলকায়েডস এসিটোজেনিন এর মতো উপাদান ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কে অনেক হরে কমিয়ে তুলতে কার্যকরী।
- আতা ফলে অনেক বেশি ফাইবার থাকার কারণে এটি ডায়রিয়া এবং কোষ্টকাঠিন্য মতো সমস্যা গুলি কে ঠিক করতে খুবই কার্যকরী, ফাইবার খাবার কে হজম করতেও অনেক সাহায্য করে, ফলে হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাই।
- আতা হলো ভিটামিন বি৬ উৎপাদনে চমৎকার উৎস, এই ভিটামিন বি৬ আমাদের সাস্থের জন্য খুবই উপকারী একটি পুষ্টিগুণ যা ডোপামিন ও সেরোটোনিন নামক একটি হ্যাপি হরমোন উৎপাদন করে ফলে আমাদের মন খুব ভালো থাকে। আপনি যদি ডিপ্রেশন বা অতিরিক্ত চিন্তা ভাবনা, মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যান তাহলে অবশ্যই এই আতা ফলটি খেয়ে দেখতে পারেন।
- আতা ফলের উপকারিতা আমাদের চোখের স্বাস্থ কে ভালো রাখতেও খুবই কার্যকরী, আতা তে পাওয়া যাই রিফ্লবিন এবং লুটেইন ক্যারোটিনয়েড আন্টি অক্সসিডেন্ট, চোখের বিভিন্ন আন্টি অক্সসিডেন্ট হয়ে থাকে এটি তার মধ্যে একটি, এর ফলে চোখে ছানি পরা, কম দেখতে পাওয়া, অন্ধ হয়ে যাওয়া এই সব থেকে মুক্তি লাভ করা যাই।
- আতা ফল রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কে বাড়াতেও ভীষণ ভাবে সক্ষম, এটির মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন C যা শরীরের ভিতরে বিভিন্ন জীবাণু এবং রোগ সংক্রামণের হাত থেকে রক্ষা করে থাকে।
- আতা ফলটির মধ্যে বিভিন্ন উপকারী মিনারেলস এবং ভিটামিন বর্তমান, যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি৬ সোহো ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম যা ব্লাড প্রেসার এর মাত্রা কে সঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং হার্ট এর বিভিন্ন সমস্যা থেকে দূরে রাখতেপ এটি সক্ষম।
- আপনার যদি কোনো কারণে দুধ থেকে না ভালো লাগে বা দুধের প্রতি কোনো এলার্জি আছে তাহলে দুধের বিকল্প হিসেবে আপনি এই আতা ফল টিকে বেঁচে নিতে পারেন। আতা ফলে দুধের মতনই পুষ্টিগুণ আছে, মানে ধরণ দুধে যা যা পুষ্টিকর উপাদান আপনি পাবেন সেই সব উপাদান গুলি একটি আতার মধ্যে পেয়ে যাবেন।
- আতা ফলের উপকারিতা চুলের ক্ষেত্রেও বর্তমান, আতার মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ আমাদের চুলেও প্রভাব ফেলে, চুলের জেলা বাড়ায়, তার সৌন্ধর্য কে ধরে রাখতে সাহায্য করে। এবং আপনার চুলে যদি খুশকি বা উকুন এর সমস্যা হয় তাহলে সেটি কে একদম বিনাশ করতেও আতার জুড়ি মেলা ভার, এর জন্য আতা ফলের পেস্ট তৈরী করে আপনাকে মাথায় লাগাতে হবে।
• 5 টি সেরা কাঁচা পেঁপের উপকারিতা যা আপনাকে ওষুধ থেকে দূরে রাখবে
আতা ফলের পার্শপ্রতিক্রিয়া
আতা ফলের উপকারিতা সাথে সাথে তার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্মদ্ধে জেনে নেওয়া ও খুবই জরুরি।
- আতার মধ্যে একটি বীজ থাকে যেটি কালো রঙের দেখতে হয়ে থাকে, সেটি সাবধানে ব্যবহার করা হয় কারণ ওই বীজ টি বিষাক্ত হয়ে থাকে।
- আতা খেলে অনেকের মধ্যে এলার্জির সম্ভাবনা দেখা দিয়ে থাকে তাই যদি এরকম হয় তাহলে সাথে সাথে আতা খাওয়া বন্ধ করে দিন।
- বেশি আতা খেলে পেট খারাপ, কোষ্টকাঠিন্য এবং ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে, তাই বেশি না খেয়ে সপ্তাহে একটি করে আতা ফল খাওয়া ভালো।
একনজরে : আজকে এই পোস্ট থেকে আমরা কি কি জানলাম
প্রথমেই আমরা জানলাম যে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য আতা ফলের উপকারিতা কিভাবে আমাদের কাজে লাগে এবং তারপর আতা ফলের উপকারিতা সাথে সাথে তার কিছু পার্শপ্রতিক্রিয়া সম্বন্ধেও জেনে নিলাম।
আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে আপনি আতা ফলের উপকারিতা নিয়ে যাবতীয় তথ্য জানতে পেরেছেন , এছাড়া আতা ফলের উপকারিতা আমাদের শরীরে কিভাবে কাজ করে বা এই বিষয়ে আরো কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনাদের কমেন্ট আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান যেখান থেকে আমরা আরো মোটিভিশন পাই।
আমাদের আজকের এই পোস্ট টি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাদের প্রিয়জন বা বন্ধু দের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এরকম নিত্যনতুন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ব্লগের সাথে যুক্ত থাকুন, এবং আমাদের সহযোগিতা করতে থাকুন।
ধন্যবাদ
বঙ্গজ্ঞান টিম