বর্তমান সময়ে হৃদরোগর জন্য মৃত্যু, এই বিষয়টি আমাদের সামনে প্রায় এসেই থাকে, শুধু যে এতে বৃদ্ধ মানুষ জন মারা যাচ্ছে সেটা কিন্তু নয়, এই হৃদরোগ এখন কম বয়েসেও ধরা পড়ছে, তাই এই পরিস্থিতে পৌছিয়ে আমাদের হার্ট ভালো রাখার উপায় সম্মন্ধে জানা খুবই দরকারি।
এক পরিসংখ্যান বলেছেন যে পুরো বিশ্বে সারাবছর প্রায় ২১ লক্ষ এর থেকেও বেশি মানুষ তামাক ব্যাবহারের জন্য হৃদরোগে মৃত্যু বোরন করছেন, অর্থাৎ একবার ভেবে দেখুন প্রত্যেক ৩-৪ মিনিটে একজন করে মানুষ মারা যাচ্ছেন।
হার্ট ভালো রাখার উপায়
হৃদরোগের কারণ যে শুধু তামাক বা ধুমপান তা কিন্তু নয়, আপনার উচ্চ রক্তচাপ এবং অতিরিক্ত কোলেস্টরল ও তার এক প্রধান কারণ, তারই সাথে যদি আপনার কোনো রোগ আগে থেকেই থেকে থাকে তাহলে অবসসই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা খুবই জরুরি।
হটাৎ এই দুর্ঘটনা কে এড়ানো সম্ভব তবে আপনাকে মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম বা আপনার হার্ট ভালো রাখার উপায় এর মধ্যে বেশ কিছু এমন উপায় যা আপনার নিত্যদিনের রুটিনে নিয়ে আসলে আপনার শরীরের সাথে সাথে হৃদরোগের যেসব কারণ গুলি আছে সেগুলি কে আটকানো সম্ভব হয়ে উঠেব।
স্বাস্থ বৈজ্ঞানিক দের মতে আপনার প্রত্যেক দিনের খাদ্যাভ্যাসে বা সামান্য শরীর চর্চা করে খুব সহজেই এই দুর্ঘটনা থেকে আপনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন। তাহলে শুরু করা যাক কিছু হার্ট ভালো রাখার উপায়, যেখান থেকে আমরা জেনে নেবো কি কি থেকে এই হৃদরোগ থেকে আমরা সাবধানে থাকতে পারবো, চলুন তাহলে আজকের এই পোস্টটি শুরু করা যাক।
সুচিপত্র
হার্ট ভালো রাখার উপায় ধুমপান এবং অ্যালকোহল বর্জন করুন
হৃদরোগের সবথেকে বেশি কারণ হলো এই তামাক এবং অ্যালকোহল শরীরের মধ্যে প্রবেশ করা, ধুমপানে যেসব ব্যাক্তি আসক্ত তাদের চেষ্টা করতে হবে কম খাওয়া তারপর আস্তে আস্তে সুম্পূর্ণ ভাবে ছেড়ে দেওয়া, নাহলে ভবিৎষতে ভীষণ বিপদের মুখে পড়তে হতে পারে।
খুব বেশি মদ্যপান আপনার নাড়ি এবং রক্তচাপ কে বাড়িয়ে তলে এবং তা আপনার হার্ট এর জন্য একদম ভালো নয়, তাই চেষ্টা করুন কম খেতে, প্রতিদিন অতিরিক্ত মদ্যপান আপনার হার্ট এবং সাস্থের জন্য একদমই উচিত নয়।
ফাইবার যুক্ত খাবার খান
হার্ট ভালো রাখার উপায় এর মধ্যে অন্যতম হলো বেশি করে ফাইবার অর্থাৎ আঁশ যুক্ত খাবার আপনাকে খেতে হবে, এই ফাইবার যুক্ত খাবার আপনার শরীরে কার্যকরী ব্যাকটেরিয়া তৈরী করতে খুবই সক্ষম যা আমাদের কোলেস্টরল কে নিয়ন্ত্রণে রাখে।
কয়েকটি ফাইবার যুক্ত সবজি এবং ফলের নাম হলো, গাজর, ব্রকোলি, আলু, মটরশুটি, বেগুন, করলা, বিট, সিম, ভেন্ডি, ভুট্টা, এই সবে অনেক বেশি ফাইবার থাকে। এবং ফলের মধ্যে হলো, আপেল, এপ্রিকট, স্ট্রবেরি, পেয়ারা, কলা, কমলালেবু এইসব ফল আপনি খেতে পারেন। এছাড়াও ওটস, চিয়া সিডস, আলমন্ড বা কাঠ বাদাম এগুলো আপনি আপনার খাদ্যের তালিকার মধ্যে রাখতে পারেন, যেমন পুষ্টি পাবেন আপনি তেমনি এতে থাকা ফাইবার আপনার হার্ট জনিত সমস্ত রোগ থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।
ফাইবারের সাথে সাথে আপনাকে প্রচুর আরো নানা ধরণের যেসব ভিটামিন রয়েছে সেই সব খাবার খাওয়াও খুবই দরকারি, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি, ভিটামিন ডি, পটাস এই সব খনিজ পদার্থে ভুরপুর খাবার খান।
• সেরা 7 টি ওটস এর উপকারিতা যা আপনাকে সুস্থ রাখবে
ব্যায়াম বা শারীরিক চর্চা
হার্ট ভালো রাখার উপায় এর মধ্যে সব থেকে আগে আসে যে আমাদের নিয়মিত আমাদের শরীর কেউ ভালো রাখতে হবে, যদি আমরা সারাদিন কোনো কিছু কাজ না করে বসে শুয়ে দিন কাটাই তাহলে আমাদের হার্ট এ সমস্যা হবেই যদি আপনি নিজের হার্ট কে সুস্থ রাখতে চান তাহলে কিছুই না খুবই সামান্য আপনাকে একটু পরিশ্রম করতে হবে, চেষ্টা করুন রোজ অন্তত ৩০ মিনিট করে একটু হাঁটার, বা আপনার কাছে যদি সময় না থাকে তাহলে অফিস বা বাড়িতে থাকলে একটু দু বার সিঁড়ি দিয়ে উঠা নাম করে নেবার।
এগুলো হলো খুবই সহজ কিছু পরিশ্রম, এছাড়াও যদি আপনি নিয়মিত ভালো ভাবে শরীর চর্চা করতে পারেন তাহলে তো কোনো কোথায় নেই কারণ অতিরিক্ত মেদের কারণেও কিছু হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে। তাই একটু চেষ্টা করুন যোগব্যায়াম করার, সাথে অল্প হাঁটাহাঁটি, আপনি যদি কোনো জিম এ যান তো আরো ভালো নাহলে এগুলি খুবই সহজে বাড়িতেও করা যাই।
স্যাচুরেটেড ফ্যাট জাতীয় খাবার খেলে হবে না
Saturated fat অর্থাৎ যেসব খাবারে জমাট বাঁধা চর্বি থাকে যেমন, চীজ, মাখন, রেড মিট, বিস্কুট, নারকেল তেল, কেক, মিউনিস, এই সব খাবার কে একটু কমাতে হবে, যদি আপনার গ্যাস অম্বল জাতীয় সমস্যা থাকে তাহলে তো একদমই খাওয়াই উচিত নয়, এতে আপনার কোলেস্টরল এর মাত্রা খুবই বেড়ে যাই এবং হৃদরোগের ঝুঁকির সমস্যা হয়ে উঠে।
লবন এবং চিনির পরিমান কমাতে হবে
হার্ট ভালো রাখার উপায় এর মধ্যে আর একটি উপায় হলো যে খাবারে এই লবন এবং চিনির ব্যাবহার একটু কম করার, বিশেষজ্ঞ রা বলে থাকেন অতিরিক্ত লবন বা মিষ্টি খেলে আপনার কোলেস্টরল বেড়ে যেতে পারে তাই সারাদিনে এক চামচ এর থেকে বেশি লবন খাওয়া উচিত নয়।
ভালো ঘুমান এবং ট্রেস ফ্রি থাকুন
অতিরিক্ত চিন্তা ভাবনা এবং ট্রেস কিন্তু হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে, তাই চেষ্টা করুন কম চিন্তা ভাবনা করার, পারলে একটু মেডিটেশন করুন, অন্য কাজে মন লাগান, এবং তারই সাথে ৭-৮ ঘন্টা ঘুম নিন, ঘুম আমাদের মস্তিষ্কের জন্য খুব ভালো, ভালো ঘুম হলে আমাদের ট্রেস এর লেভেল তও কম হয় এবং তার ফলে আমাদের হার্ট ও সুস্থ থাকে।
একনজরে : আজকে এই পোস্ট থেকে আমরা কি কি জানলাম
প্রথমে আমরা জানলাম যে হার্ট ভালো রাখার উপায় কি কি ভাবে হতে পারে এবং তারপর সেইসব উপায় গুলি নিয়ে আমরা বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করে নিলাম।
আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে আপনি হার্ট ভালো রাখার উপায় নিয়ে যাবতীয় তথ্য জানতে পেরেছেন , এছাড়া হার্ট ভালো রাখার উপায় বা এই বিষয়ে আরো কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনাদের কমেন্ট আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান যেখান থেকে আমরা আরো মোটিভিশন পাই।
আমাদের আজকের এই পোস্ট টি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাদের প্রিয়জন বা বন্ধু দের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এরকম নিত্যনতুন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ব্লগের সাথে যুক্ত থাকুন, এবং আমাদের সহযোগিতা করতে থাকুন।
ধন্যবাদ
বঙ্গজ্ঞান টিম