সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা এবং তার পুষ্টিগুণ

Rate this post

মাছে ভাতে বাঙালি এটা আমাদের কথা তেই আছে, আমাদের নিত্যদিনের খাবারে প্রায় কিছু না কিছু মাছ হয়েই থাকে, আর বাঙালি মাছ ভালোবাসে না এরকম কিছু পাওয়া মুশকিল, তবে আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় বস্তু হলো সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা নিয়ে। মিষ্টি জলের মাছ এবং সামুদ্রিক মাছের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে, মিষ্টি জলে মাছের মধ্যে যে মিনারেলস এবং পুষ্টিগুণ পাওয়া যাই তার থেকে অনেক গুন্ বেশি পাওয়া যাই এই সামুদ্রিক মাছের থেকে।

সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা

সামুদ্রিক মাছের মধ্যে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা অনেক গুরুতর রোগ পর্যন্ত সরিয়ে তুলতে সক্ষম, মিষ্টি জলের মাছের থেকে সামুদ্রিক মাছের মধ্যে কম ক্যালোরি থাকে, এবং এর গুনাগুন ও প্রচুর। উপকূল অঞ্চলে বসবাস করি মানুষ ছাড়াও প্রায় সব জায়গার ই মানুষজন এই সামুদ্রিক মাছ খেতে পছন্দ করে থাকে, বিভিন্ন ধরণের মাছের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সামুদ্রিক মাছের নাম হলো – রূপচাঁদা, চিংড়ি, ইলিশ, লাইখা, কোরাল, চেলা, টুনা, স্যামন, ফোঁপা, লইট্যা সহ আরো বিভিন্ন রকমের সামুদ্রিক মাছ আছে যেসবের মধ্যে মিনারেল এবং ভিটামিন খুব বেশি করে পাওয়া যাই। 

সামুদ্রিক মাছের পুষ্টিগুণ 

   •  সামুদ্রিক মাছে দুই ধরণের ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যাই, DHA এবং EPA, এই দুটি ফ্যাটি এসিড আমাদের শরীর নিজে থেকে উদপাদন করতে পারে না, শুধু মাত্র সামুদ্রিক মাছের থেকেই এই পুষ্টিগুণ টি পাওয়া যাই, যা আমাদের শরীর খাদের মাধ্যমে গ্রহণ করে থাকে। 

   •  প্রায় ১০০ গ্রাম সামুদ্রিক মাছের মধ্যে ৪০ গ্রাম মতো প্রোটিন পাওয়া যাই। 

   •  সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি এবং পর্যাপ্ত পরিমানে মিনারেলস এবং ভিটামিন পাওয়া যাই। 

   •  এই মাছে জিঙ্ক এবং আয়োডিন আছে তাছাড়াও এর মধ্যে পটাসিয়াম সেলেনিয়াম সহ আরো পুষ্টিকর উপাদান পাওয়া যাই। 

   •  এই সামুদ্রিক মাছ খুবই কম ক্যালোরি যুক্ত একটি খাবার। 

সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা

সামুদ্রিক মাছে কি কি পুষ্টিগুণ পাওয়া যাই যেসব নিয়ে আলোচনা করলাম এবার আমরা জেনে নেবো যে সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা কিভাবে আমাদের শরীরের মধ্যে পরে, এবং তা থেকে কি কি রোগের হাত থেকে আমরা রেহাই পাই। 

কোলেস্টরল কমাতে সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা

বর্তমান সময়ের খাবার এবং ভেজাল খাওয়ার জন্য মানুষ জন কম রোগের হাতে ভুগছেন না, তারই মধ্যে একটি হলো এই কোলেস্টরল, সামুদ্রিক মাছের মধ্যে ভিটামিন এ, এবং ভিটামিন ডি পাওয়া যাই যা কোলেস্টরল কমাতে খুবই কার্যকরী। এআপনার কোলেস্টরল সঠিক থাকলে আপনার হার্ট ও ভালো থাকবে, তাই হার্ট জনিত কোনো রোগ হওয়ার আশঙ্কা কম।

  • চিয়া সিড এর উপকারিতা 

হার্ট আট্যাকের ঝুঁকি কমাতে সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা

সামুদ্রিক ম্যাচে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড যা আমাদের হার্টের জন্য খুবই উপকারী, এর ফলে আমাদের হার্ট শুধু থাকে, এবং ভবিৎষতে কোনো গুরুতর রোগের হাত থেকেও রক্ষা পাওয়া যাই। 

মস্তিস্ক ভালো রাখতে সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা

ছোট বাচ্ছা অবস্থায়, মানে শিশু বয়েসে শারীরিক এবং মানসিক গঠনে সাহায্য করে থাকে এই সামুদ্রিক মাছ, এই মাছের মধ্যে থাকে পুষ্টি গুন্ শিশু বয়েসে মস্তিষ্কের কিছু অংশে ক্ষমতা বাড়াতে খুবই কার্যকরী। এবং তার সাথে এটি মনে রাখার স্মৃতি কে বাড়িয়ে তুলতেও অনেক সাহায্য করে, ফলে ভবিৎষতে ডিমেনশিয়া, এবং আলজাইমার হাত থেকেও আমাদের কে রক্ষা করে থাকে। 

শরীরে ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়াতে সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা

সামুদ্রিক মাছের মধ্যে আছে জিঙ্ক এবং আয়োডিন, জিঙ্ক যা রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কে বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম, এবং আয়োডিন থাইরয়েড কমানোর জন্য খুবই ভালো একটি উপাদান, এটি গলগণ্ড রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। এছাড়াও পেশির কার্যকমটা লোপ পাওয়া থেকেও বাছাই, এবং তারই সাথে যাদের নার্ভের সমস্যা রয়েছে সেই সবের হাত থেকেও সাহায্য করে থাকে। 

দৃষ্টিশক্তি কে ভালো রাখে 

সামুদ্রিক মাছ খাওয়া খুবই ভালো, এই মাছের মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ আমাদের চোখ কে ভালো রাখে এবং চোখের রেটিনা কে সুস্থ রাখতেও খুবই কার্যকরী। 

খুবই সহজে হজমযোগ্য আমিষ 

সামুদ্রিক মাছ খেলে খুবই সহজে এবং তাড়াতাড়ি তা হজম হয়ে যাই, আপনি যদি আপনার ওজন কমাতে চান তাহলে অবশ্যই এই মাছ কে আপনি আপনার খাদ্যের তালিকার মধ্যে রাখতে পারেন, খুবই কম যুক্তি ক্যালোরি হওয়ার কারণে এটি তাড়াতাড়ি যেমন হজম ও করবে তেমনি আপনার ওজন কেউ নিয়ন্ত্রণে রাখবে। 

সামুদ্রিক মাছের ক্ষতিকর দিক 

এতক্ষন আমরা জানলাম যে সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা কি কি হতে পারে আবার আমরা জেনে নেবো এই সামুদ্রিক মাছ কাদের খাওয়া উচিত নয়, এবং কি কি অসুবিধে থাকলে এই মাছ কে আপনাকে এড়িয়ে চলতে হবে। 

  • যেসব মহিলারা গর্ভাবস্থায় রয়েছেন তাদের এই সামুদ্রিক মাছ খেতে ব্যারন করা হয়ে থাকে, কারণ এই মাছে অনেকটা পরিমানে মার্কারি আছে যা মা এবং বাচ্ছা দুই এর জন্য হানিকারণ হতে পারে। 
  • অনেকের চিংড়ি খেলে এলার্জি দেখা যাই, তাই এরকম যদি কোনো সম্ভাবনা দেখেন তাহলে তখুনি এই মাছ খাওয়া আপনাকে বন্ধ করতে হবে। 
  • কিডনি এবং বাতের সমস্যায় যেসব ব্যাক্তি ভুগছেন তাদের পক্ষেও এই মাছ ক্ষতিকর, কারণ এই মাছে অনেক পরিমানে প্রোটিন এবং মিনারেল রয়েছে যা সেই সব অবস্থায় খাওয়া ভালো নয়। 
  • সামুদ্রিক মাছ খেলে অবশ্যই ভালো করে শেখ করে তবেই খাবেন, কাঁচা বা অর্ধেক সেকদ মাছ খুবই ক্ষতিকর।  

  রক্তশুন্যতায় ড্রাগণ ফলের উপকারিতা

একনজরে : আজকে এই পোস্ট থেকে আমরা কি কি জানলাম 

প্রথমে আমরা জানলাম যে সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা এবং তার পুষ্টিগুণ গুলি কি কি, তার পর জানলাম সামুদ্রিক মাছ আমাদের উপকার আসার সাথে সাথে তার ক্ষতিকর দিক গুলি কি হতে পারে। 

আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে আপনি সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা নিয়ে যাবতীয় তথ্য জানতে পেরেছেন , এছাড়া সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা উপায় বা এই বিষয়ে  আরো কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনাদের কমেন্ট আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান যেখান থেকে আমরা আরো মোটিভিশন পাই। 

আমাদের আজকের এই পোস্ট টি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই  আপনাদের প্রিয়জন বা বন্ধু দের  সাথে  শেয়ার করতে পারেন।  আর এরকম নিত্যনতুন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ব্লগের সাথে যুক্ত থাকুন, এবং আমাদের সহযোগিতা করতে থাকুন। 

ধন্যবাদ  

বঙ্গজ্ঞান টিম

শেয়ার করুন:

নমস্কার , বঙ্গজ্ঞান ওয়েবসাইটে আপনাদের স্বাগত , আপনাদের বিভিন্ন বিষয়ে যেমন ব্যবসা , ক্যারিয়ার , কম্পিউটার জ্ঞান , ইন্টারনেট ইত্যাদির উপর আমরা তথ্য নিয়ে আসি প্রতি সপ্তাহে সোমবার এবং শুক্রবার । আমাদের উদ্দেশ্য আপনাদের সবার কাছে বাংলা ভাষায় সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া।

Leave a Comment