কিভাবে চা দোকানের ব্যবসা শুরু করবো ? সেরা ৮ টি টিপস

5/5 - (4 votes)

বর্তমানে এমন মানুষ খুব কম আছে যারা চা পান করতে পছন্দ করে না , হয়তো আপনিও তার মধ্যে একজন যে চা খুব পছন্দ করেন , আর  চা খাওয়ার তো কোনো সঠিক সময় নেই  তাই অনেকে আছে যারা শুধু একবার নয় বরং দিনে কম পক্ষে ৪-৫ বার চা পান করেই থাকে। আমরা প্রায় দেখি বাজারের মধ্যে,  কোনো অফিস এর পাশে কিংবা রাস্তার মোড়ে  চা দোকান গুলোতে ভীষণ পরিমানে প্রায় সারাক্ষন ভিড় লেগেই থাকে। এছাড়া ট্রেন বাস এমন কি আপনি যদি কোথাও ঘুরতে যান তাহলেও কিন্তু আপনার সঙ্গী হয়ে  থাকে এই চা। 

আপনি কি জানেন চা উদ্পাদনের ক্ষেত্রে পুরো পৃথিবীর মধ্যে ভারতবর্ষ দ্বিতীয় নাম্বারে আসে । তাহলে আপনারা নিশ্চই বুঝতে পারছেন যে আমাদের ভারতবর্ষে কত বেশি চা পান করা হয়ে থাকে এছাড়া চা রপ্তানি ও করা হয় ভারতবর্ষ থেকে বিভিন্ন দেশ বিদেশে । আপনাদের মধ্যে অনেকেই আমাকে কমেন্ট ও মেসেজ করে জানিয়েছেন চা দোকানের ব্যবসা সম্বন্ধে বিস্তারিত জানাতে , তাই আজকের আমাদের এই পোস্ট টি তে আমরা দেখে নেবো যে কিভাবে আমরা চা দোকানের ব্যবসা শুরু করবো এবং এই ব্যবসা তে ভবিৎষতে কতটা লাভ করতে পারবো। 

কিভাবে চা দোকানের ব্যবসা শুরু করবো ?

আমরা দেখতে পাই যে বড়ো হোক বা ছোটো চা দোকানের ব্যবসা কিভাবে বেড়েই যাচ্ছে, সেটা চায়ের দোকান খুলেই হোক  বা একটি Tea Cafe এ খুলে। স্বাভাবিকভাবে যে কোনো ব্যবসা শুরু করতে গেলে তার জন্য বেশ কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হয় এবং একটি উপযুক্ত ব্যবসায়িক প্ল্যান এর প্রয়োজন হয় , তাহলে চলুন তাহলে আমরা কয়েকটি সহজ পয়েন্ট এর মাধ্যমে এই বিষয় গুলো জেনে নি যে কিভাবে একটি সফল চা দোকানের ব্যবসা শুরু করা যায় ।

১. অল্প পুঁজি তে চা দোকানের ব্যবসা

এই ব্যবসা এমন যে আপনি সামান্য ৫ হাজার টাকা থেকেও শুরু করতে পারবেন একটি চায়ের ছোট চায়ের দোকান খুলে , বা আপনার কাছে যদি একটু  বেশি পুঁজি থাকে  ইনভেসমেন্ট করার জন্য তাহলে  আপনি প্রথমে যদি একটি স্টল ওপেন করা কথা ভাবতে পারেন  , মানে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকার মধ্যে সেখান থেকে আপনি মাসে প্রায় ৬০ – ৭০ হাজার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন, আর এটি ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত যাওয়া  আশ্চর্য্যের কিছু নেই। তো প্রথমে   আপনি এই ভাবে শুরু করতে পারেন , পরে আস্তে আস্তে যখন আপনি ভালো ইনকাম করতে শুরু করবেন তখন আপনার স্টলটিকে আপডেট করুন বা আরো একটা স্টল খুলুন।

২. চা দোকানের ব্যবসা তে লাভ কিরকম আছে 

অনেকেরই  মনে ধারণা আছে যে এই চা ব্যবসাটি খুব ছোট মানের , কিন্তু সেটা একদমই সত্যি নই আপনি কি জানেন ২০১৫ সালে একটা রিপোর্ট এর মাধ্যমে  জানা গেছিলো যে ভারতবর্ষের চা ক্যাফে এবং চা বারের  যে মার্কেট আছে সেটি ৮২০ কোটি টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে, তারমানে প্রতি বছর যদি এরকম ভাবে বৃদ্ধি পাই তাহলে ভাবুক আগামী কয়েক বছরে কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে।

       প্রায় সব জায়গাতেই একটা চায়ের কাপ ৫ টাকা থেকে শুরু করে খুব বেশি হলে ১৫ টাকা ,তাহলে আপনি যদি প্রতি চায়ের কাপে ৫০% করেও লাভ রাখেন এবং আপনি দিনের শেষে যদি ৩০০ কাপ পর্যন্ত বিক্রি করেন তাহলে ভাবুন তো যে আপনার লাভ কিরকম হচ্ছে একদিনে শুধু।  

Notes : আপনি হয়তো ভাবছেন ৩০০ কাপ চা বিক্রি করা তো বিশাল বড়ো ব্যাপার , আসলে সেরকম কিছু না , এটা আমাদের মনে হয় যে ৩০০ কাপ চা বিক্রি করা অনেক বড়ো ব্যাপার , কিন্তু আপনি যখন ব্যবসা শুরু করবেন  আর সেটা যদি সঠিক লোকেশনে হয় তাহলে কোনো কোনো দিন আপনার ৩০০ কাপ এর থেকে বেশি বিক্রি হতে পারে ।

    • সেরা ১০ টি কম ইনভেস্টমেন্ট ব্যবসার আইডিয়া (Low Investment Business ideas in Bengali)

৩. চা দোকানের ব্যবসা এর ক্ষেত্রে আমাদের  প্রথম কাজ গুলি কি কি হবে ?

যে কোনো ব্যবসা শুরু করার আগে আমাদের একটা পরিকল্পনা করে নিতে হয় , ঠিক সেরকম এই চা দোকানের ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার একটি সঠিক পরিকল্পনার প্রয়োজন । চলুন তাহলে দেখে নি এই চা দোকানের ব্যবসা শুরুতে কি কি লাগতে পারে এবং কোনো কোন জিনিস কে মাথায় রাখতে হবে ।

৩.১. সমস্ত দরকারি লাইসেন্স বানিয়ে নেওয়া

ব্যবসা শুরু করার আগে আমাদের কিন্তু প্রথমেই মাথায় আসে দরকারি কাগজপত্র বা লাইসেন্সের। অনেক সময় আমরা দেখি যে রাস্তার পাশে অনেক চায়ের দোকান খুলে থাকতে আর আর মাঝে মাঝে সেই দোকান গুলো কে উঠিয়ে দেওয়া হয়, কিন্তু আপনার কাছে যদি সঠিক লাইসেন্স থাকে তাহলে আপনার দোকানটিকে বাঁচাতে পারবেন এবং তার ক্ষতিপূরুন ও নিতে পারবেন। 

          আপনার যদি ছোট চায়ের দোকান  হয়ে থাকে তাহলে আপনি সেখানকার Municipal অফিস থেকে লাইসেন্স নিতে পারেন।  আর যদি আপনার চায়ের ব্যাবসার বড়ো মানের হয় , যেমন চা ক্যাফে বা টি বার সেক্ষেত্রে আপনাকে FSSAI লাইসেন্স এবং ফায়ার ডিপার্টমেন্ট থেকে ফায়ার সেফটি লাইসেন্স নিতে হবে। 

৩.২. চা দোকানের ব্যবসা এর জন্য পরিচিতিমলূক নাম 

একটি সঠিক ব্রান্ডের  নাম আপনাকে কিন্তু সমগ্র দেশের কাছের জনপ্রিয় করে তুলবে , আজকের দিনে যেমন MBA Chaiwala, Chaayos , Chai  Point , Chai Sutta Bar , Chai Thela এগুলি খুবই জনপ্রিয়, যারা শুধু মাত্র চা বিক্রি করে আজকে এরকম জায়গায় এসেছে। 

       আপনার ব্যবসাতে খুবই দরকার এই ব্র্যান্ড নামের কারণ আপনি যদি কালকে এই ব্যাবসার জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেন তাহলে কিন্তু অনেকেই আপনার এই বিজনেসে  ইনভেসমেন্ট করতে চাইবে, আর আপনি চাইলে  সেখান থেকে Franchise ও নিতে পারেন। 

৩.৩. চা তৈরী করার সামগ্রী 

চা বানানোর জন্য আপনাকে কিছু বেসিক জিনিস সবসময় হাতের কাছে রাখতেই হবে যেমন, একটা কেটলি ,স্টোভ , LPG গ্যাস সিলিন্ডার , সারভিং ট্রে , কাচের গ্লাস , কাপ , দুধ , চিনি , জল, চায়ের জন্য যাবতীয় মসলা এসব উপকরণের আপনার দরকার পরবে।  জিনিসপত্র কেনার সময় আপনার এই ব্যবসাটি কতটা বড়ো বা তার উপর কিন্তু নির্ভর করবে। 

৪. বেশি কাস্টমার  টার্গেট কিভাবে করবো 

 আজকাল তো আমরা এটাও দেখি যে চা দোকান  গুলো তে  প্লাষ্টিক গ্লাস বা কাঁচের গ্লাসে ছাড়াও মাটির কাপ রাখা হয়ে থাকে আর সেগুলোতে চা খাওয়া মানুষ ও খুব পছন্দ করে।  তাহলে আপনিও চেষ্টা করুন  আপনার ব্যাবসার ক্ষেত্রে কিছু নতুনত্ব বা  ইউনিক  কিছু করার।

      আপনার যদি একটি চা ক্যাফে হয়ে থাকে তাহলে আপনি চেষ্টা করুন ক্যাফের ইন্টেরিয়র ডিজাইন এর  দিকে, আপনাকে এটা বুঝতে হবে যে আপনার কাস্টমার  শুধু আপনার ক্যাফে তে চা খেতে আসে না বরং তারা নিজেদের কিছু সময় কাটাতেও আসে ,তাই কেউ না কেউ তাদের অফিস কলিগদের সাথে কেউ বন্ধু বান্ধব নিয়ে এবং কেউ কেউ নিজেদের পরিবার নিয়ে, তাহলে আপনি যদি আপনার চা ক্যাফে তে ইন্টেরিয়র ডিজাইন এর উপর মন দেন তাহলে কাস্টমার আরো অনেক্ষন পর্যন্ত আপনার ক্যাফে তে থাকা পছন্দ করবে।

কাস্টমার যতক্ষণ থাকবে আপনার ক্যাফে এর জিনিস ও বিক্রি হতে থাকবে তার সাথে সাথে আপনিও  লাভ করবেন । তাছাড়াও আপনি যে চা পরিবেশন করবেন সেই কাপ বা ট্রে গুলো কে চেষ্টা করুন একটু ট্রেন্ডি বা আধুনিক লুক দেবার।  

৪.১. কত প্রকারের চা রাখব 

মানুষ শুধু একই প্রকারের চা পান করে সেটি কিন্তু নয় , ভিন্ন ভিন্ন রকমের চা বানানো হয়ে থাকে।  আপনি যদি বেশি কাস্টমার টার্গেট করতে চান তাহলে আপনাকে  কিন্তু চায়ের বিভিন্ন ভ্যারাইটি রাখতেই হবে , যেমন আদা চা, মসলা চা , তুলসী চা , মালাই চা , লেবু চা , মধু চা , গুড়ের চা ও তান্দুরী চা এগুলো সবই কিন্তু আপনি রাখতে পারেন এক্সপেরিমেন্ট জন্য।  কারণ আপনারা দেখে থাকবেন কোনো কোনো দোকানের কোনো একটা রেসিপি ফেমাস হয়। তাহলে আপনার যদি কোনো একটি চায়ের রেসিপি ফেমাস হয়ে যাই তাহলে বাস আর কোনো কথাই নেই।  

৫. মার্কেট রিসার্চ 

আমরা অনেকেই এটাই মনে করি যে চায়ের ব্যবসা তো যেখানে আমরা দোকান করবো সেখানেই চলে যাবে কিন্তু সেটি আমাদের একটি মস্ত বড়ো ভুল। সঠিক জায়গা নির্বাচন করা এবং কোথায় এই ব্যবসাটি  করলে আমাদের লাভ হবে সেটি কিন্তু আপনাকে একটু ভেবে নিতে হবে। 

          চায়ের দোকান খোলার আগে ঐজন্য আপনাকে একটু মার্কেট রিসার্চ করে নিতে হবে আপনি যেখানে ব্যবসাটি খুলবেন সেখানে চায়ের ডিমান্ড আছে কি নেই , আপনি এই ব্যবসাটি যদি কোনো হসপিটাল অথবা ইউনিভার্সিটির বাইরে বা কোনো সরকারি বা বেসরকারী অফিসের বাইরে যদি খোলেন তাহলে সেসব জায়গা গুলিতে লোকজন  রোজ অনেক  আসে আর আপনিও সেখানে আপনার কাস্টমার পেয়ে যাবেন, আর রোজ আপনার দোকানের চা বেশি পরিমানে বিক্রি হতে থাকবে আর আপনিও  এর থেকে লাভ করবেন।   

৬. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং 

এখনকার দিনে সোশ্যাল মিডিয়াকে কিন্তু একদমই বাদ দেওয়া যাবে না।  চা এর এই ব্যবসাটি খোলার আগে আপনি ফেইসবুক , ইনস্টাগ্রাম,  ইউটিউব এ  পেজ এবং একাউন্ট বানিয়ে নিন ,  সেখানে চায়ের ছবি বা ভিডিও তুলে পোস্ট করতে পারেন  তার তার সাথে কাস্টমার এর রিভিউ এবং তাদের অভিজ্ঞতা  দিতে পারেন। কোথাও যেতে গেলে আমরা google সার্চে Near Me দিই , সেখানে যদি আপনার পেজটি রাঙ্ক করে তাহলে আপনার ব্যাবসার জনপ্রিয় আরও বাড়বে  

৭. চা দোকানের ব্যবসা এর ইনভেসমেন্ট 

 চায়ের এই ব্যবসাটি আপনি ৫০০০ থেকে ৬০০০ মধ্যেও  শুরু করতে পারেন আবার আপনি কত ইনভেসমেন্ট  করতে চান সেটি সম্পূর্ণ আপনার নিজেদের হাতে। আপনার যদি ছোট দুকান হয়ে থাকে থাহলে সেক্ষেত্রে আলাদা আবার আপনি যদি একটি চা ক্যাফে অথবা চা বার এর মালিক হন তাহলে সেক্ষেত্রে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ও খরচ হতে পারে।

৮. চা দোকানের ব্যবসা এর  ভবিষৎ 

বর্তমানে সময়ে চা দোকানের ব্যবসা একটি অভিনব ব্যবসার আইডিয়া , অনেকেই আছে যারা এই চা ব্যবসা ছোটো থেকে শুরু করে আজকে অনেক বড়ো জায়গায় রয়েছে । আর এই ব্যবসার ভবিষৎ ও রয়েছে কারণ চা এর বিকল্প যতদিন আসছে আমাদের কাছে ততদিন তো মানুষ চা খাবেই । আরেকটা কথা এখন খুব শোনা যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া তে যে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ( A.I.) চলে এসেছে এরপর তো আমাদের ব্যবসা চাকরি সব যাবে , আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আসাতে অবশ্যই চাকরি ব্যবসাতে প্রভাব পড়বে , কিন্তু বেশ কিছু ব্যবসা ও চাকরি রয়েছে যেগুলোতে কোনোদিন A.I. সেরকম প্রভাব পড়বে না , যেমন এই চা ব্যবসা কে আপনি একটা উদাহরণ হিসাবে ধরে নিতে পারেন ।

•  আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা অর্থাৎ  A.I.  কি ?

একনজরে : আজকে এই পোস্ট থেকে আমরা কি কি জানলাম 

প্রথমেই আমরা জানলাম যে এই ব্যবসাতে লাভ কিরকম আছে এবং এই ব্যবসাটি করতে গেলে আমাদের প্রথম কাজ গুলি কি কি হতে পারে।  তারপর জানলাম  যদি এইসব কিছু জানায় পর ও কেউ এই ব্যবসাটি খুলতে চাই তাহলে তাকে কাস্টোমার টার্গেট এবং মার্কেট রিসার্চ কিভাবে করতে হবে। 

আমরা আশা করি আমাদের আজকের এই পোস্ট থেকে আপনি চা দোকানের ব্যবসা সম্মন্ধে যাবতীয় তথ্য পেয়েছেন, আর এছাড়াও যদি এই ব্যাবসা নিয়ে আরো ও কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। 

আমাদের আজকের এই পোস্ট টি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাদের প্রিয়জন বা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।  আর এরকম নিত্যনতুন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ব্লগের সাথে যুক্ত থাকুন, এবং আমাদের সহযোগিতা করতে থাকুন। 

ধন্যবান 

বঙ্গজ্ঞান টিম

শেয়ার করুন:

নমস্কার , বঙ্গজ্ঞান ওয়েবসাইটে আপনাদের স্বাগত , আপনাদের বিভিন্ন বিষয়ে যেমন ব্যবসা , ক্যারিয়ার , কম্পিউটার জ্ঞান , ইন্টারনেট ইত্যাদির উপর আমরা তথ্য নিয়ে আসি প্রতি সপ্তাহে সোমবার এবং শুক্রবার । আমাদের উদ্দেশ্য আপনাদের সবার কাছে বাংলা ভাষায় সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া।

2 thoughts on “কিভাবে চা দোকানের ব্যবসা শুরু করবো ? সেরা ৮ টি টিপস”

Leave a Comment