টক দই খাওয়ার উপকারিতা

Rate this post

এই গরমে খাবারের পর শেষ পাতে যদি একটু টক দই থাকে তো জমে যাই, অনেকেই দুধ খেতে ভালো বাসেন না তাই দুধের বিকল্প হিসেবে এই টক দই এর জুড়ি মেলা ভার, টক দই খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি যা জানলে সত্যি অবাক হতে হয়।

টক দই কে বিভিন্ন ভাবেই খাওয়া হয়ে হবে থাকে যেমন দই শরবত, দই লস্যি, রায়তা, ফ্রুরুট সালাদ এর সাথে দই মিশিয়ে, ভাত এর সাথে দই, নানা স্বাদে দই কে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। শুধু কি তাই, বাজারেও নানা ধরণের দই এর বিক্রি হয়েই আসছে, মিষ্টি টক দই ছাড়াও, বিভিন্ন ফলের ফ্লেভার মিশ্রিত দই, এবং রাস্তার পাশে স্টল এ এই গরমের সময় দই এর  আইটেম পাওয়া যাই। 

 টক দই খাওয়ার উপকারিতা

টক দই শুধু যে স্বাদেই ভালো তা কিন্তু একদম নয় এর প্রচুর হেলথ বেনিফিটস ও রয়েছে, যা আমাদের শরীরে অনেক কাজে লাগে এবং টক দই খাওয়ার উপকারিতা আমরা পেয়ে থাকি। টক দই এ আছে অনেক উপকারী  ব্যাক্টেরিয়া, এবং প্রো-বায়োটিক এর উপাদান, যা শরীর থেকে সমস্ত ধরণের ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া গুলো কে মেরে ফেলে শরীর কে রোগ মুক্ত করে তুলে এবং আমাদের ইমিউনিটি পাওয়ার কে আরো শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করে।

 এছাড়াও আছে প্রচুর এবং পুষ্টিকর উপাদান যা আমাদের শরীর কে সুস্থ রাখে বেশ কার্যকরী তাই আজ আমরা জেনে নেবো টক দই খাওয়ার উপকারিতা কি ভাবে আমাদের শরীরের উপর পরে থাকে তাহলে চলুন আজকের এই পোস্টটি শুরু করা যাক। 

ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার উপকারিতা

যারা ওজন কমাতে চান তাদের খাদ্যের তালিকার মধ্যে এই টক দই থাকবেই কারণ ওজন কমানোর জন্য সব থেকে কার্যকরী এই টক দই যা আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে সাহায্য করে, তার পাশাপাশি আমাদের ত্বক কেউ অনেক ভালো রাখে। 

টক দই এ পাওয়া যাই প্রচুর ধরণের প্রোটিন ও ভিটামিন যা আমাদের প্রায় অনেক্ষন খিদে পেতে দেয় না এবং হজমে অনেক সাহায্য করে, তাই যারা ডায়েটে থাকেন তাদের কে বলা হয়ে থাকে যে লাঞ্চ এবং ডিনার এর টাইম এ বাটি করে টক দই খাবার জন্য। 

  • চিয়া সিড এর উপকারিতা

রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কে বাড়িয়ে তোলে 

যদি আপনি রোজ এই দই খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীর ভেতর থেকেও রোগমুক্ত হয়ে উঠবে, দই এর মধ্যে আছে প্রচুর প্রোটিন এবং ভিটামিন যা আমাদের শরীরে পৌছিয়ে ওষুধের মতো কাজ করে সেই সাথে রোগ থেকে লড়াই করার শক্তি কেউ দ্বিগুন পর্যন্ত বাড়িয়ে তোলে। 

কোষ্টকাঠিন্য কে দূরে রাখে 

আমাদের দেহে টক দই খাওয়ার উপকারিতা অনেক, এর মধ্যে আছে ল্যাকটিক এসিড যা কোষ্টকাঠিন্য হতে দেয় না এমনকি ডায়রিয়া মতো সমস্যা কেউ দূরে রাখে ফলে আমাদের পেটে অসুখে তেমন পড়তে হয় না। 

ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে 

দই এর মধ্যে পাওয়া যাই প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম যা আমাদের হাড় মজবুত রাখার জন্য খুবই দরকারি, বিশেষ করে মহিলাদের রোজ নিয়ম করে এই টক দই খাওয়া উচিত। 

কারণ মহিলাদের ক্যালসিয়াম এর প্রয়োজন বেশি হয়, পা এর বেথা, হাঁটুর রোগ ইত্যাদি সমস্যায় মহিলা রা বেশি ভুগে থাকেন এই ক্যালসিয়াম এর ঘাটতির জন্যই,

এছাড়াও টক দই এ আছে Vitamin D যা দাঁতের গঠন এবং মজবুত করতে সাহায্য করে। 

হার্ট ভালো রাখতে টক দই খাওয়ার উপকারিতা

টক দই এর মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ খারাপ কোলেস্টরল কে কমিয়ে ভালো কোলেস্টরল এর মাত্রা কে বাড়িয়ে তোলে, তাই দই খেলে যে কোনো রকমের হার্ট এর অসুখ থেকে আমরা মুক্তি পেয়ে থাকি। 

ত্বক এবং চুলের জন্য টক দই খাওয়ার উপকারিতা

শুধু শরীর ভালো রাখতে টক দই খাওয়া উপকারী সেটা নয় দেহের সাথে সাথে দই আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য ও তত তাই গুরুত্বপূর্ণ। 

  • মুখে যদি কোনো রকম দাগ থাকে অথবা, ত্বক খুব শুস্ক হয়ে যাচ্ছে কোনো উজ্জ্বলতা নেই, তখন মাঝে মধ্যে এই প্যাক টি আপনি লাগাতে পারেন, দই এর সাথে মুধু মিশিয়ে সপ্তাহে একবার লাগিয়ে দেখতে পারেন, এর ফল আপনি নিজের চোখের দেখতে পারবেন। 
  • ঘরোয়া ভাবে যদি আপনার ত্বকের পরিচর্যা করতে চান তাহলে বেসন, মধু, দই, হলুদ এর গুঁড়ো এবং কফি পাউডার এই গুলি কে একসাথে মিশিয়ে একটা ফেস প্যাক তৈরী করে নিয়ে লাগাতে পারেন, এর ফলে আপনার ত্বক সুস্থ থাকবে, রোদের পড়া টান উঠে যাবে এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। 
  • চুলের ক্ষেত্রে মাসে একবার আপনি হেনার সাথে মিশিয়েও লাগাতে পারেন অথবা, দই এবং ডিমের সাদা অংশ একসাথে মিশিয়ে লাগাতে পারেন, এতে আপনার চুলের জেল্লা ফিরে আসবে, তেমনি চুলের সাস্থ ও খুব ভালো হয়ে উঠবে। 

  • রক্তশুন্যতায় ড্রাগণ ফলের উপকারিতা

টক দই এর ক্ষতিকর দিক

টক দই খাওয়ার উপকারিতা সাথে এর কিছু ক্ষতিকর দিক গুলো ও আছে যে সব বিষয়ে আমাদের জেনে নেওয়া খুবই জরুরি। 

রাতে দই খাওয়া উচিত নয় 

পুষ্টিবিদরা বলে থাকেন খুব রাত্রে দই খাওয়া একদমই উচিত নয়, যদি খেতেই হয় তাহলে সন্ধে ৭.০০ টার আগে খেয়ে নিতে হবে, বেশি রাত্রে খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে এবং তার জন্য মিউকাস এর সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে, যার ফলে শ্বাসকষ্ট, সর্দি কাশি এই সবের সমস্যা হয়। 

নিয়ম মেনে দই খান 

আপনি যদি সঠিক ভাবে দই খান তাহলে আপনি টক দই খাওয়ার উপকারিতা পাবেন কিন্তু সঠিক নিয়মে না খেলেই বিপদের আশঙ্কা। শুধু দই খেলে অনেকেরই অম্বল হয়ে থাকে তাই চেষ্টা করুন দই সাথে অল্প একটু মধু বা গুড় মিশিয়ে খেতে, চিনি না খাওয়াই ভালো, এর ফলে আপনার অম্বল গ্যাস ইত্যাদি আর হবে না। 

যদি আপনার ঠান্ডা লেগে থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে দই না খাওয়াই ভালো এবং আপনার ঠান্ডার ধাত থাকলে দু দিন বাদে দই খেতে পারেন। 

  • 5 টি সেরা কাঁচা পেঁপের উপকারিতা যা আপনাকে ওষুধ থেকে দূরে রাখবে

 

একনজরে : আজকে এই পোস্ট থেকে আমরা কি কি জানলাম 

প্রথমে আমরা জানলাম যে টক দই খাওয়ার উপকারিতা কি হতে পারে এবং তারপর জেনে নিলাম আমাদের শরীর কি ভাবে দই এর উপকারিতা পেয়ে থাকে এবং তার সাথে দই খাওয়ার কিছু ক্ষতিকর দিক গুলো ও জেনে নিলাম। 

আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে আপনি টক দই খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে যাবতীয় তথ্য জানতে পেরেছেন , এছাড়া টক দই খাওয়ার উপকারিতা বা এই বিষয়ে  আরো কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনাদের কমেন্ট আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান যেখান থেকে আমরা আরো মোটিভিশন পাই। 

আমাদের আজকের এই পোস্ট টি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই  আপনাদের প্রিয়জন বা বন্ধু দের  সাথে  শেয়ার করতে পারেন।  আর এরকম নিত্যনতুন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ব্লগের সাথে যুক্ত থাকুন, এবং আমাদের সহযোগিতা করতে থাকুন। 

ধন্যবাদ  

বঙ্গজ্ঞান টিম

শেয়ার করুন:

আমি সুরভী , আমি একজন কনটেন্ট রাইটার এবং একজন প্রফেশনাল মেহেন্দি ডিজাইনার । সাধারণত আমি হেলথ লাইফস্টাইল Niche এর উপর কনটেন্ট লিখতে ভালোবাসি । আর বঙ্গজ্ঞান এর মতো ট্রাস্টেড প্লাটফর্মে কনটেন্ট রাইটিং এর সুযোগ পেয়ে আমি অত্যন্ত খুশি ।

Leave a Comment