সেরা ৭ টি ওজন কমানোর উপায়

5/5 - (3 votes)

বর্তমান সময়ে ওজনের সমস্যা নিয়ে ভোগেন না এমন কম মানুষজনই আছেন, শরীরের মধ্যে মেদ অতিরিক্ত হয়ে গেলে আমাদের অনেক সময় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বেশি ওজন হয়ে গেলে তার থেকে শরীরে অনেক রকমের রোগের সৃষ্টি করে যেমন ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা ইত্যাদি অনেক রকমের রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। 

আবার আপনার হয়তো কোনো অপেরেশন হবে তাই শরীরে অস্ত্রপ্রচারের আগে ডাক্তার পরামর্শ দেন যে তার আগে একটু ওজন কমিয়ে নেওয়া উচিত। 

ওজন কমানোর উপায়

আপনারা ভাবছেন যে ওজন কমানো হয়তো অনেক বড়ো রকমের কিছু অথবা আপনাকে সারাদিন হয়তো না খেয়েই থাকতে হবে বা ওজন কমাবার জন্য হয়তো অনেক অর্থ ব্যায় করতে হবে, এগুলোর মধ্যে কোনো কিছুই আপনাকে করতে হবে না। 

বরং খুবই সহজ ভাবেই আপনি আপনার ওজন কে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন তাও খুবই সহজ কিছু উপায় এর সাহায্যে, যদি আপনি সেগুলি একটু মেনে চলতে পারেন এবং নিত্যদিনের রুটিনে সেগুলো করতে পারেন তাহলে খুবই সহজেই আপনি মাসে ৩-৪ কেজি ওজন কমাতে পারবেন। তাই আজকে বঙ্গজ্ঞান নিয়ে এসেছে বেশ কিছু সহজ ওজন কমানোর উপায় যেখানে আপনি আপনার ব্যস্ত লাইফ স্টাইল এর সাথেও খুবই সহজে ম্যানেজ করে চলতে পারবেন, চলুন তাহলে আজকের এই পোস্ট টি শুরু করা যাক।  

খাদ্যাভাসের পরিবর্তন 

ওজন কমানোর উপায় এর মধ্যে প্রথমেই আসে আপনার প্রতিদিনের খাদ্যভাসকে পালটানো, অনেকেই আছেন যারা সকালের ব্রেকফাস্ট খুবই কম খেয়ে থাকেন কিন্তু রাতের ডিনার তা ভীষণ ভারী খেয়ে নেন এটা আপনার শরীরের জন্য তো খারাপই এবং আপনার ওজন এর জন্য ও খুবই ক্ষতিকর। বরং আমাদের সকালের ব্রেকফাস্টে ভারী খাবার খাওয়া উচিত, তারপর লাঞ্চে মিডিয়াম কিছু খান এবং রাত্রে খুবই সাধারণ কিছু খেতে হবে , আর চেষ্টা করুন রাত্রি ৮ টার মধ্যে ডিনার করে নেবার এবং খাওয়ার ২ ঘন্টা পর ঘুমানোর। 

সকালে ভারী খাবার খেলে সমস্যা হয় না কারণ সারাদিন আমরা এক্টিভ থাকি কিছু না কিছু কাজ করি তাই আমাদের সেই খাবার টি তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যাই এবং সেটা থেকে মেদের সৃষ্টি হয় না, ওই দিকে আপনি যদি রাত্রে ভারী খাবার খান তাও  আবার দেরি করে তাহলে সেটা হজম হতে অনেক সময় লাগে এবং আপনি রাতে আর কাজ করেন না ঘুমিয়ে যান ফলে অতিরিক্ত খাবার এর জন্য আপনার শরীরে আরো অনেক রকমের সমস্যা দেখা দেয়, তাই চেষ্টা করুন রাত্রে কম এবং তাড়াতাড়ি খেয়ে নেবার। 

  • সেরা 7 টি ওটস এর উপকারিতা যা আপনাকে সুস্থ রাখবে

কি কি খাবেন ?

ওজন কমানোর উপায় এর মধ্যে আর একটি উপায় হলো যে আপনি আপনার খাদ্যের তালিকার মধ্যে কি কি রাখবেন, তবে চেষ্টা করবেন বেশি করে শাক সবজি খাওয়া, green vegetable যেমন আপনার স্কিন এর জন্য ভালো তেমনি আপনার ওজন কমাতেও সাহায্য করে। চলুন একটি খাদ্যের তালিকা করে দেখে নি যে আমরা এই সময় কি কি খেতে পারি। 

ব্রেকফাস্ট – ব্রেকফাস্টে আপনি ওটস, চিয়া সিড, ডিম সেদ্ধ অথবা ডিমের পোচ, ব্রেড, ফল অথবা ফলের জুস, হালকা তেলের সাথে সেঁকা পরোটা, টক দই, চালের তৈরী কোনো খাবার ইত্যাদি রাখতে পারেন এবং স্বাদ পাল্টানোর জন্য প্রতিদিন খাবার চেঞ্জ করে করে খেতে পারেন তবে আপনি যাই এই খাবেন সেটা যেন পেট ভোরে খাবেন। 

লাঞ্চ – দুপুরে লাঞ্চের সময় আপনি, অল্প ভাত, যে কোনো ডাল এক বাটি, শাকসবজি, এবং তার সাথে চাইলে ছোট মাছ অথবা চিকেন রাখতে পারেন তবে খেয়াল রাখবেন যেন বেশি তেলে রান্না না হয় বা বেশি মসলা, এবং ফ্যাট জাতীয় না হয়, চিকেন এর ব্রেস্ট পিস খুবই ভালো এই ওজন কমানোর ক্ষেত্রে।  আর সাথে এক বাটি টক দই, দই ওজন কমাবার পাশাপাশি আপনার শরীরে অনেক উপকারে লাগে, আর পরে খিদে পেলে লাঞ্চ এর ৩০ মিনিট পরে আপনি ফল খেতে পারেন। 

ডিনার – ডিনারের সময় দুটো রুটি, সবজি, এইসব রাখতে পারেন, চাইলে ফল অথবা কিছু স্মুদি বানিয়েও খাওয়া যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে ডিনারের পর র কোনো খাবার যেন না খাওয়া হয় তাহলে সেটা হজমে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। 

খাবারের জিনিস এর চেঞ্জ আপনি করতেই পারেন তবে এটা মাথায় রাখতে হবে যেন বাইরের জাঙ্ক ফুড এবং চর্বি জাতীয় খাবার কে এড়িয়ে চলার, বাইরের খাবার চাইলে আপনি বাড়িতে বানিয়ে খেতেই পারেন তও সপ্তাহে একবার। 

  • চিয়া সিড এর উপকারিতা

শরীর চর্চার মাধ্যমে ওজন কমানোর উপায়

ওজন কমানোর উপায় এর মধ্যে এটি তো পর্বেই তা বলে একদমই নয় যে আপনাকে সবসময় ব্যায়াম করতে হবে। আপনার সুবিধে মতো একটা সময় বেছে নিন, সেটা সকালে হোক বা বিকেলে, এই ক্ষেত্রে আপনি ১ ঘন্টা মতো সময় রাখুন। এই টুকু টাইম এ আপনি বিভিন্ন ভাবে শরীর চর্চা করে নিন, সাইকেলিং করতে পারেন বা দৌড়াতে অথবা ছোড়ে হাঁটতে পারেন, তাছাড়াও ব্যায়াম বা যোগ ব্যাম করতে পারেন, যোগাসন বা যোগ ব্যায়াম করা অত্যন্ত ভালো আপনার শরীর কে ফিট করতে যেমন কার্যকরী তেমনি আপনার মস্তিস্ক কে ভালো রাখতেও কাজে লাগে। তাই চেষ্টা করুন যেটা আপনার ভালো লাগে সেই ভাবে একটু শরীর চর্চা করে নেওয়া যাতে আপনি এনজয় ও করেন এবং তার সাথে আপনার ওজন কেউ কমাতে সাহায্য হয়। 

পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম 

একজন মানুষের ৭-৮ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজনীয় তার থেকে বেশি নয় কারণ তার ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ারও সম্ভবনা থাকে, তাই চেষ্টা করুন আপনি ওই ৭-৮ ঘন্টার ঘুম তা সঠিক ভাবে নেওয়ার। তাছাড়াও দুপুর বেলায় ঘুমানো তাকে আপনাকে এড়িয়ে চলতে হবে, দুপুরে ঘুমালে শরীররের ওজন তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাই তাই কোনো মোটেও দুপুরে ঘুমানো যাবে না। 

মিষ্টি থেকে দূরে থাকুন 

ওজন কমানোর উপায় এর অন্যতম উপায় হলো আপনাকে মিষ্টি বা চিনি এগুলো একটু এভোযেড করে চলতে হবে, আপনি কি জানেন প্রায় ১ চামচ চিনি তে ১৬ শতাংশ মতো ক্যালোরি থাকে, চিনির বদলে আপনি মধু ব্যাবহার করতে পারেন, তাছাড়া সুগার ফ্রি মিষ্টি, এগুলো খেতে পারেন।

চায়ের ক্ষেত্রে গ্রীন টি খেতে পারেন, যেটা আপনার শরীরের জন্য খুবই ভালো, তাছাড়া ব্ল্যাক কফি, ইত্যাদি খাওয়া যেতেই পারে, সকালে উঠে ২-৩ তে কাঠ বাদাম, বা ভেজানো ছোলা, খেতে পারেন খুবই ভালো আপনার সাস্থের জন্য। 

  • বিশেষ 7 টি কাঠ বাদাম এর উপকারিতা 

সঠিক নিয়ম মেনে জল খান 

জল একটি এমন জিনিস যা আমরা যখন তখন তো খেতেই থাকি কিন্তু আপনি কি জানেন এই জল না বুঝে খেতে কত তা শরীরে সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে, তাই ওজন কমানোর উপায় মধ্যে আর একটি উপায় হলো নিয়ম মেনে জল খান। খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে জল খেয়ে নিন, এবং যখন আপনি খাবার খাবেন তখন চেষ্টা করুন জল একদমই না খাওয়ার যদি খুবই মন চাই তাহলে ১-২ সিপ্ খেতে পারেন, তার পর একদম খাবার শেষ করে ৩০ মিনিট পর অনেক তা জল খেয়ে নিন। 

আর সবসময় মাথায় রাখবেন যে জল বসে বসে খাওয়াই উচিত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কখনোই জল পান করা উচিত নয়, জল আমাদের শরীরের মধ্যে অনেক খানি প্রভাব ফেলে, খাবারের হজম করার মতো ভূমিকা পালন করে তাই একটু এই ভাবে মেনে চলুন পার্থক্য আপনি নিজের চোখেই দেখতে পাবেন। 

ওষুধ পত্র থেকে দূরে থাকুন 

বাজারে এখন অনেক রকমের ওষুধ পাওয়া যাই যেখানে বলা হয় যে এই ওষুধ খেতে থাকলে শরীরের চর্বি কমে যাই, সেই সব মেডিসিন থেকে দূরে থাকুন কারণ ওষুধ ভেতরে গিয়ে ভবিৎষতে অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে, আরো গুরুতর রোগের দিকে ঠেলে দেয়। 

হা এবার যদি আপনি সঠিক ডাক্তার দেখিয়ে কিছু করেন তাহলে সেখানে আপনি সমসময় সুপরামর্শই পাবেন। 

অতিরিক্ত চিন্তা থেকে দূরে থাকুন 

বর্তমান সময়ের এত কাজের চাপ এবং তার সাথে অন্যান্য চিন্তা ফলে আমাদের শরীর ধীরে ধীরে আরো খারাপ হতে শুরু করে, তাই চেষ্টা করুন বেশি উদ্বেগ না হওয়ার, চিন্তা বেশি না করার নাহলে আপনার কোনো কিছু তাই মন বসবে না এবং আপনি যা নিজের শরীর এর করছেন তা কোনো কিছুই কাজে লাগবে না তাই চিন্তা করুন নিজের মেন্টাল হেলথ কে সুস্থ রাখার। 

 

 একনজরে : আজকে এই পোস্ট থেকে আমরা কি কি জানলাম 

প্রথমে আমরা জানলাম যে ওজন কমানোর উপায় কি কি হতে পারে , এবং তারপর ওজন আমরা কিভাবে কমাতে পারি সেই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জেনে নিলাম। 

 

আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে আপনি ওজন কমানোর উপায় নিয়ে যাবতীয় তথ্য জানতে পেরেছেন , এছাড়া ওজন কমানোর উপায় বা এই বিষয়ে  আরো কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনাদের কমেন্ট আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান যেখান থেকে আমরা আরো মোটিভিশন পাই। 

আমাদের আজকের এই পোস্ট টি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই  আপনাদের প্রিয়জন বা বন্ধু দের  সাথে  শেয়ার করতে পারেন।  আর এরকম নিত্যনতুন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ব্লগের সাথে যুক্ত থাকুন, এবং আমাদের সহযোগিতা করতে থাকুন। 

ধন্যবাদ  

বঙ্গজ্ঞান টিম

শেয়ার করুন:

আমি সুরভী , আমি একজন কনটেন্ট রাইটার এবং একজন প্রফেশনাল মেহেন্দি ডিজাইনার । সাধারণত আমি হেলথ লাইফস্টাইল Niche এর উপর কনটেন্ট লিখতে ভালোবাসি । আর বঙ্গজ্ঞান এর মতো ট্রাস্টেড প্লাটফর্মে কনটেন্ট রাইটিং এর সুযোগ পেয়ে আমি অত্যন্ত খুশি ।

Leave a Comment