এফিলিয়েট মার্কেটিং কি ? এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো ?

5/5 - (4 votes)

বর্তমানে সারা বিশ্বে শুধু করোনা মহামারীর ব্যাপারে বেশি শোনা যাচ্ছে যার ফলে সকলে অনেকটাই  ঘাবড়ে রয়েছে , এই মহামারী তে মানুষের জীবনের ঝুঁকি তো আছেই তার সাথে এই মহামারী হাজার হাজার মানুষের জীবিকা অর্থাৎ কাজ কেড়ে নিয়েছে । এর ফলে ভারত ও বাংলাদেশ এর আর্থিক ব্যবস্থায় অনেক বেশি খারাপ প্রভাব ফেলেছে , ফলে ভারত ও বাংলাদেশে বেকারত্বের সংখ্যা চরম সীমায় পৌঁছে গেছে । তাই ভালো পড়াশোনা জানা অর্থাৎ উচ্চ শিক্ষিত ছেলে মেয়েরা কম বেতনের কাজ করতে বাধ্য হয়ে পড়ছে , অথবা কেউ কেউ নিজেদের জমানো টাকা পয়সা দিয়ে নিজের কিছু ব্যবসা শুরু করতে চাইছে । 

আজকের এই পোস্টে আপনাদের এমন একটা ইনকাম করার উপায় বলবো যেটা থেকে আপনি ঘরে বসে একটু পরিশ্রম করে ভালো টাকা রোজগার করতে পারবেন । বর্তমানে টেকনোলজির সাথে টাকা  ইনকাম করার পদ্ধতি অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে , এখন যে কোনো ব্যক্তি ইন্টারনেট থেকে টাকা ইনকাম করতে পারে । 

আজকাল বেশিরভাগ মানুষ কিছু কেনা জন্য বা শপিং করার জন্য বাইরে যাওয়া পছন্দ করেনা , আর এটির প্রবণতা করোনা মহামারীর পরে আরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে ।

কারণ তারা ঘরে বসে অনলাইন কেনাকাটা করতে বেশি পছন্দ করে আর আজকাল ইন্টারনেটে আপনার প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুই অনলাইনে উপলব্ধ রয়েছে সেটা কাপড় থেকে শুরু করে মোবাইল , বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্ট এমনকি মুদিখানা জিনিস পত্র । এইসব কিছু আপনি অনলাইন শপিং ওয়েবসাইট গুলিতে খুব সহজে পেয়ে যাবেন ।

এই কারণে অনেকে অনলাইন ব্যবসা করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে আর এই জন্য অনেকে ব্লগ বা ওয়েবসাইট বানাচ্ছে , সোশ্যাল মিডিয়া তে গ্রুপ বানিয়ে নিজেদের প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজেদের প্রোডাক্ট বিক্রি করছে । এছাড়া আরও একটা দুর্দান্ত উপায় রয়েছে যেটা অনলাইন ব্যাবসায়ীদের জন্য অনেক বেশি সুবিধাজনক , সেই উপায় টি হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং ।

যদি আপনি অনলাইন বিজনেস করেন কিংবা অনলাইনে কাজের সাথে যুক্ত আছেন যেমন ব্লগ্গিং, ইউটিউব চ্যানেল , ফ্রীলান্সিং ইত্যাদি তাহলে আপনি নিশ্চয় এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কথা শুনেছেন। 

আর যদি আপনি এই মার্কেটিং এর সম্বন্ধে না জেনে থাকেন তাহলে কোনো সমস্যা নেই আমাদের আজকের এই পোস্ট শুধু তাদের জন্য যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্বন্ধে বিশদে জানেন না । আজকের এই পোস্টে আমরা জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং কি ? এটি কিভাবে কাজ করে ? কিভাবে আমরা এই কাজের সাথে যুক্ত হতে পারি ? এছাড়া আরও বেশ কিছু তথ্য 

 চলুন তাহলে শুরু করা যাক 

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি ?

এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন এক প্রক্রিয়া যেখানে একজন ব্যক্তি অন্য এক ব্যক্তির  প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপন প্রচার করে এবং সেই প্রোডাক্ট বিক্রি হওয়ার পরে  সেই  প্রোডাক্টের মূল্য প্রতি একটি কমিশন পায় , এই সম্পূর্ণ ব্যাপারটিকে এফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয় ।

চলুন বিষয় টা নিয়ে একটু বিশদে জানা যাক 

এফিলিয়েট মার্কেটিং টাকা ইনকামের এমন এক পদ্ধতি যেটা তে একজন ব্যক্তি তার নিজের কোনো অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে যেমন ব্লগ, ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়া

এর মাধ্যমে অন্য কোনো কোম্পানির প্রোডাক্ট এর মার্কেটিং এবং প্রচার করে। আর এই জন্য সেই কোম্পানি তার প্রতি প্রোডাক্টের বিক্রি প্রতি কিছু টাকা কমিশন হিসেবে দিয়ে থাকে । যে কমিশন দেওয়া হয় সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে সেই প্রোডাক্টের মূল্যের উপর ।

এমন অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা তাদের প্রোডাক্ট এর জন্য এফিলিয়েট প্রোগ্রাম চালু করে যাতে তাদের প্রোডাক্ট বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে ।

আর এই জন্য যারা যারা তাদের কোম্পানির প্রোডাক্ট গুলো কেনার জন্য নিজেদের ব্লগ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সুপারিশ করে সেইসব প্রোডাক্ট কেনার জন্য , প্রোডাক্ট বিক্রি হওয়াতে তাদের কোম্পানি থেকে কমিশন দেওয়া হয় । এর থেকে কোম্পানি এবং ওই প্রোডাক্ট এর মার্কেটিং করা ব্যক্তি দুজনেরই অনেক লাভ হয় ।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করা খুব সহজ , কারণ এর থেকে সেই সকল ব্যক্তি ইনকাম করতে পারে যারা ইন্টারনেটের সাথে নানা ভাবে যুক্ত রয়েছে । বিশেষ করে একজন ব্লগার ও ইউটিউবার এর জন্য এটা একটা অন্যতম ইনকামের বিকল্প হতে পারে যাদের ব্লগ গুগল এডসেন্স দ্বারা অনুমোদন বা Approval হয়না ।

 

      • ইউটিউবার হতে চান ? ১৫টি সহজ স্টেপ মেনে আপনিও একজন ইউটিউবার  হয়ে যান   

 

মজার ব্যাপার হলো যে ব্লগ গুলো গুগল এডসেন্স দ্বারা অনুমোদন করা হয়না , সেই ব্লগ গুলোতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনেক বেশি ইনকাম করতে পারে সেই ব্লগের মালিকরা ।

সেই ভাবে ইউটিউবের ক্ষেত্রেও তাই , যতদিন ৪০০০ ঘন্টা ও ১০০০ সাবস্ক্রাইবার পূর্ণ না হচ্ছে ততদিন এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ভালো ইনকাম করতে পারে ।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে ?

যখন থেকে অনলাইন শপিং করার প্রচলন বেড়ে উঠতে লাগলো তখন থেকে মানুষ বাজারে গিয়ে কেনাকাটা করা অনেকটাই কমিয়ে দিলো , ফলে বাজারে আসা নতুন নতুন প্রোডাক্ট গুলো অজানা থেকে যেতে লাগলো মানুষের কাছে এবং তার সাথে সাথে বর্তমানে সকলে তাদের বেশিরভাগ সময় সোশ্যাল মিডিয়া তে কাটায় ফলে তারা টেলিভিশন দেখাও বন্ধ করে দিয়েছে যেখানে তারা নতুন নতুন প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ।

এই জন্য বিভিন্ন কোম্পানির এফিলিয়েট প্রোগ্রাম শুরু করেছে যাতে তাদের প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপন ও বিক্রি দুটোই হতে পারে ।           

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি

আজকাল কমবেশি অনেক মানুষ অনলাইন ইনকাম করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করছে , আর তার মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ইনকাম করছে । এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য আপনাকে যে কোনো একটি এফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর সাথে যুক্ত হতে হবে ।

এরম বেশ কিছু জনপ্রিয় এফিলিয়েট মার্কেটিং কোম্পানি রয়েছে ( যাদের নাম আমরা একটু পরে আলোচনা করছি ) যারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে এফিলিয়েট প্রোগ্রাম করে থাকে ।

এই সকল কোম্পানি গুলি তাদের প্রোডাক্ট এর প্রচার করার জন্য তাদের এফিলিয়েট মার্কেটারস দের ভালো পরিমান কমিশন দিয়ে থাকে । এফিলিয়েট মার্কেটারস তাদের বলা হয় যারা কোনো এফিলিয়েট প্রোগ্র্যাম এর সাথে যুক্ত হয়ে সেখানে তাদের প্রোডাক্ট গুলোকে নিজেদের অনলাইন প্লাটফর্ম গুলিতে প্রচার করে , সেটা যে কেউ হতে পারে যারা অনলাইন প্লাটফর্ম এর সাথে যুক্ত আছে ।

যখন কোনো ব্যক্তি এফিলিয়েট এর সাথে যুক্ত হয় তখন সেই এফিলিয়েট প্রোগ্রাম পরিচালিত কোম্পানি এফিলিয়েট মার্কেটারস দেড় তাদের প্রোডাক্টের প্রচার করার জন্য ব্যানার ও লিংক দিয়ে থাকে । এই লিংক ও ব্যানার গুলি এফিলিয়েট মার্কেটারস তাদের ব্লগ, ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়া তে শেয়ার করে ।

সেই লিংক ও ব্যানার এ ক্লিক করে ব্লগ ও ওয়েবসাইট ভিসিটর এই কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করার ওয়েবসাইটে আসে , যেখানে তারা সেই প্রোডাক্ট গুলো কিনতে পারে এবং সেই ব্লগ ও ওয়েবসাইট এর মালিক কে বা এফিলিয়েট মার্কেটার্স কে প্রোডাক্ট এর বিক্রি অনুযায়ী কমিশন দিয়ে থাকে সেই এফিলিয়েট কোম্পানি ।

তবে একটা কথা অবশ্যই আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে যে কোম্পানির প্রোডাক্ট গুলোকে ব্লগ ও ওয়েবসাইটে লাগানোর জন্য আপনার ব্লগ ও ওয়েবসাইটে অনেক বেশি ট্রাফিক অর্থাৎ ভিসিটর থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন , কারণ যদি আপনার ব্লগ ও ওয়েবসাইটে বেশি ট্রাফিক বা ভিসিটর আসে তবেই আপনি এফিলিয়েট থেকে ভালো একটা টাকা ইনকাম করতে পারবেন ।

ধরুন আপনার ব্লগে প্রতিদিন ১০০০ জন ভিসিটর এলো তার মধ্যে ২-৩ জনই আপনার এফিলিয়েট লিংক বা ব্যানার এ ক্লিক করে সেই প্রোডাক্ট টি কিনবে । এটা অবশ্যই নির্ভর করে আপনার ব্লগের কনটেন্ট ও আপনার এফিলিয়েট প্রোডাক্ট এর উপর ।

এছাড়া আপনার যদি একটা ইউটিউব চ্যানেল থাকে , তাহলে আপনি এই চ্যানেল এর মাধমেও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন । এখানে আপনি আপনার কনটেন্ট এর সাথে জড়িত বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন , এতে আপনার ইনকাম ও বাড়বে ।

যদি আপনার কাছে কোনো ব্লগ , ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেল না থাকে তাহলে আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন । যেমন আপনি আপনার ফেসবুক , ইনস্টাগ্রাম , হোয়াটসএপ  ইত্যাদি প্লাটফর্ম এ গ্রুপ বানিয়ে সেখানে আপনার এফিলিয়েট লিংক শেয়ার করে ইনকাম করতে পারেন ।

যদি আপনি এমন কোনও প্রোডাক্ট বেছে নেন এফিলিয়েট এর জন্য আর সেটা যদি ট্রেন্ডিং থাকে অর্থাৎ মানুষ যদি সেটা খুব পছন্দ করছে , তাহলে আপনার এখানে ইনকাম অনেক বেশি হতে পারে । 

দ্রষ্টব্যঃ একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যে শুধু গ্রুপ বানিয়ে নিলে চলবে না , আপনার গ্রুপে বেশি ফলয়ার্স এবং মেম্বার থাকতে হবে ।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো (৭ টি ধাপে)

আপনাদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন আসছে সেটা হলো যে এফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং এটি কিভাবে কাজ করে সেটাতো জানা হলো কিন্তু এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো। চলুন তাহলে জেনে নি এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো কয়েকটি সহজ ধাপে।

ধাপ ১ : সর্বপ্রথমে আপনি আপনার পছন্দ মতো একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরী করুন ।

ধাপ ২ : এরপর একটি ক্যাটাগরি বাছুন অর্থাৎ কোন বিষয়ের উপর আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট বানাবেন । তবে একটা কথা মাথায় রাখবেন সেই বিষয় টিতে যেন আপনার আগ্রহ থাকে ।

ধাপ ৩ : ব্লগের বিষয় বেছে নেওয়ার পর আপনি সেই বিষয়টির উপর রিসার্চ করুন যে কোন কোন প্রোডাক্ট এর উপর আপনি আপনার ব্লগে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন ।

ধাপ ৪ : এরপর আপনি আপনার ব্লগে বা ওয়েবসাইটে কনটেন্ট দেওয়া শুরু করুন এবং ট্রাফিক বা ভিসিটর বা অডিয়েন্স নিয়ে আসার চেষ্টা করুন । যত বেশি ট্রাফিক আসবে আপনার ব্লগে ততই ভালো । 

ধাপ ৫ : যে কোনো একটি এফিলিয়েট প্রোগ্রামে রেজিস্ট্রেশন বা সাইন আপ করুন ।

ধাপ ৬ : আপনারে ব্লগে কনটেন্ট দেওয়ার পর এবং এফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর সাথে যুক্ত হওয়ার পর আপনি আপনার এফিলিয়েট প্রোডাক্ট গুলিকে আপনার কনটেন্ট এর মধ্যে যোগ করুন । 

ধাপ ৭ : এই সব কিছু হয়ে যাওয়ার পর আরও রিসার্চ করুন এবং আপনার এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে চলুন ।

 

জনপ্রিয় কিছু এফিলিয়েট প্রোগ্রামের নাম

সেভাবে দেখতে গেলে তো সব এফিলিয়েট প্রোগ্রাম ভালো এবং জনপ্রিয় , কিন্তু তার মধ্যে বেশ কিছু জনপ্রিয় এফিলিয়েট প্রোগ্রাম রয়েছে , যারা ইতিমধ্যে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এবং এদের সাথে অনেক মানুষ এফিলিয়েট মার্কেটিং করছে ।

চলুন তাহলে দেখে নি সেই কয়েকটি জনপ্রিয় এফিলিয়েট প্রোগ্রাম গুলি 

 

• ফ্লিপকার্ট এফিলিয়েট প্রোগ্রাম (Flipkart Affiliate Program)

এটি ভারতের সর্ববৃহৎ এফিলিয়েট প্রোগ্রামগুলির মধ্যে একটি  , ফ্লিপকার্ট এফিলিয়েট প্রোগ্রাম আপনাকে প্রচুর প্রোডাক্টের উপর এফিলিয়েট করার সুযোগ দেয় , এবং সম্পূর্ণ বিনামূল্যে যে কেউ ফ্লিপকার্ট এফিলিয়েট প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করতে পারে ।

ফ্লিপকার্ট এফিলিয়েট প্রোগ্রাম একটি বিশস্ত অনলাইন প্লাটফর্ম , যেখানে আপনি খুব সহজেই কাজ করতে পারেন কোনো সমস্যা ছাড়াই । তাছাড়া ফ্লিপকার্ট ভালো এফিলিয়েট কমিশন ও দিয়ে থাকে তার এফিলিয়েট মার্কেটার দের ।

আমাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং (Amazon Affiliate Marketing)

আমাজন এফিলিয়েট প্রোগ্রাম বিশ্বের সেরা এফিলিয়েট প্রোগ্রাম , বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো আমাজন । আমাজন তার এফিলিয়েট মার্কেটার দের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে । আমাজন এফিলিয়েট প্রোগ্রামে নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশন করা খুব সহজ । আপনি আপনার কিছু তথ্য দিয়ে একটি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর একাউন্ট বানিয়ে নিতে পারবেন ।

আমাজন সারা বিশ্বের  সবচেয়ে বড়ো ই কমার্স প্লাটফর্ম , তাই আপনি প্রচুর প্রোডাক্ট পেয়ে যাবেন এফিলিয়েট র জন্য । আমাজন এফিলিয়েট মার্কেটাররা প্রোডাক্ট বিক্রি থেকে প্রায় ১০-১২ % এফিলিয়েট কমিশন উপার্জন করতে পারে। 

• রিসেলার ক্লাব (Reseller Club)

• ভি কমিশন ( Vcommission )

• ইবে এফিলিয়েট প্রোগ্রাম (eBay affiliate program )

• গো ড্যাডি এফিলিয়েট প্রোগ্রাম (GoDaddy Affiliate program)

আপনাদের মধ্যে যারা ওয়েবসাইট বা ব্লগ্গিং এর ব্যাপারে আগ্রহ রাখেন তারা নিশ্চয়  ডোমেইন ও হোস্টিং এর নাম শুনেছেন । গো ড্যাডি ওয়েবসাইট সাধারণত ডোমেইন ও হোস্টিং  এর জন্য বিখ্যাত , এটি সারা বিশ্বে একটি অন্যতম ডোমেইন ও হোস্টিং সেলিং প্লাটফর্ম ।

গো ড্যাডি এফিলিয়েট প্রোগ্রামের এতে যুক্ত হয়ে আপনি ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন খুব অল্প সময়ে , কারণ বর্তমান সময়ে সবাই নিজের ফেসবুক ও হোয়াটস্যাপ একাউন্ট এর মতো একটা নিজের ওয়েবসাইট বানাতে চায় , ফলে প্রতিদিন প্রায় লক্ষ লক্ষ ওয়েবসাইট ও ব্লগ বানানো হচ্ছে ইন্টারনেটের দুনিয়ায় ।   

 

এছাড়াও বেশ কিছু এফিলিয়েট প্রোগ্রাম রয়েছে কিন্তু উপরে ৬ টি সবচেয়ে ভালো , নিরাপদ এবং বেশি মুনাফা দিয়ে থাকে ।

উপরে উল্লেখিত যে কোনো একটি এফিলিয়েট প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত হয়ে আপনি কাজ শুরু করতে পারেন । এই এফিলিয়েট প্রোগ্রামের কোন প্রোডাক্ট নিয়ে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার ব্লগ ও ওয়েবসাইটের কনটেন্ট এর উপর , তাই আপনার কনটেন্ট এর বিষয় অনুযায়ী এফিলিয়েট প্রোডাক্ট বেছে নিন এবং কাজ শুরু করুন । 

এফিলিয়েট মার্কেটিং কোথায় থেকে শিখবো ?

পৃথিবীতে যে কোনো কাজ করার আগে সেটা শেখা অত্যন্ত প্রয়োজন । না শিখে আপনি সেই কাজ করতে গেলে সেখান থেকে আপনাকে হতাশ হয়ে ফিরতে হবে । তাই এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার আগে আপনাকে এটি শিখতে হবে , যেমন এখানে কিভাবে কাজ হয় , এখানে কাজ করার বিভিন্ন কলা কৌশল , কি কি পদ্ধতিতে আপনার বিক্রি বাড়ানো সম্ভব ইত্যাদি আরও অনেক কিছু শিখতে হবে ।

বর্তমানে ইন্টারনেটে অর্থাৎ অনলাইনে এবং অফলাইনে বেশ কিছু প্লাটফর্ম রয়েছে যেখানে আপনি খুব সহজে এফিলিয়েট মার্কেটিং কোর্স করতে পারবেন ।

আপনি যদি বিনামূল্যে এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে চান তাহলে আপনি ইউটিউব এর সাহায্যে শিখতে পারেন , ইউটিউবে এরম অনেক চ্যানেল আছে যেখানে সুন্দর ভাবে এবং সম্পূর্ণ ভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে পারবেন ।

আপনি যদি পেইড কোর্স করতে চান তাহলে আপনার এফিলিয়েট মার্কেটিং করা টা আরও বেশি সহজ হবে , কারণ এফিলিয়েট মার্কেটিং পেইড কোর্সে আপনার কাজ করতে গিয়ে যে সমস্ত সমস্যা আসবে  সেটা আপনি সহজে সমাধান করতে পারবেন । আপনি ইন্টারনেটে এরম অনেক ওয়েবসাইট পাবেন যেখানে আপনি খুব অল্প খরচে এবং অল্প সময়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখে নিতে পারবেন ।

আমার মতামতে এফিলিয়েট মার্কেটিং কোর্সের জন্য সেরা ওয়েবসাইট হচ্ছে Udemy

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা

এফিলিয়েট মার্কেটিং করার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে , চলুন তাহলে সেই সুবিধা গুলি দেখে নি 

১. প্রথমত ব্যবসায়ীদের গ্রাহক বা কাস্টমার  বৃদ্ধি হয় ফলে প্রোডাক্ট ও সার্ভিস বেশি বিক্রি হয় ।

২. একজন এফিলিয়েট মার্কেটার এর কোনোরকম ঝামেলার মধ্যে পড়তে হয়না , যেমন কাস্টমার সার্ভিস , হিসাব পত্র দেখা , প্রোডাক্ট এর কোনো সমস্যা ইত্যাদি , কারণ এইসব কিছু সেই ব্যবসায়ী বা কোম্পানির কাজ ।

৩. একটা এন্ড্রয়েড মোবাইল বা একটা কম্পিউটার বা ল্যাপটপ আর ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে আপনি যেকোনো জায়গা থেকে এই কাজ করতে পারেন ।

৪.  একজন এফিলিয়েট মার্কেটার অন্যান্য কাজের সাথে এই কাজ করতে পারে । যেমন কেউ ১০ – ৬ টা অফিসে কাজ করছে , তারপর বাকি সময়ে সে এই কাজ করতে পারে । এটা আপনার জন্য একটা প্যাসিভ ইনকামের উপায় ও হতে পারে ।

 

» প্যাসিভ ইনকাম কি ? সেরা ১০ টি প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া 

 

৫. সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যে আপনাকে এখানে কোনো বিনিয়োগ করতে হয় না , কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই আপনি বিভিন্ন ধরণের প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন আপনার ব্লগ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ।

৬. ব্যবসায়ীদের বিজ্ঞাপন খরচ অনেক কম লাগে , কারণ এফিলিয়েট কমিশন এর থেকে বিজ্ঞাপনে খরচ বেশি হয় , তাই এফিলিয়েট মার্কেটার দের দিয়ে তারা বিজ্ঞাপন এবং বিক্রি দুটোই করিয়ে নেয় ।

আরও পড়ুন 

» ডিজিটাল মার্কেটিং কি ? ডিজিটাল মার্কেটিং এর  A to Z তথ্য 

 

» ক্রিপ্টোকারেন্সি কি ? সেরা কয়েকটি ক্রিপ্টোকারেন্সির নাম 

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর অসুবিধা 

সব জিনিসের সুবিধা এবং অসুবিধা থাকে , ঠিক এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেও কিছু অসুবিধা রয়েছে চলুন তাহলে দেখি নি সেই অসুবিধা গুলো 

১. এফিলিয়েট মার্কেটিং গোটা বিষয় টি যেহেতু অনলাইনের বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে হয়ে থাকে তাই পাসওয়ার্ড চুরি , লিংক চুরির মতো বিষয় গুলি  হতে পারে ।

২. অনেক সময় বেশ কিছু প্রতারক মানুষ দ্বারা আপনি প্রতরণার জালে জড়িয়ে পড়তে পারেন , যেমন আপনাকে কেউ বললো যে আমার প্রোডাক্ট এর এফিলিয়েট করুন , তার বদলে সে অনেক বেশি কমিশন দিতে রাজি হয়ে গেলো , এবং আপনিও সেই সময় রাজি হয়ে গেলেন , এবং তার দেওয়া লিংক যখনই আপনি ব্যবহার করবেন তখনই আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর বিভিন্ন তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে । তাই এইসব প্রতারক মানুষদের থেকে সাবধান ।

৩. অনেক সময় এফিলিয়েট মার্কেটার পাওয়ার জন্য কিছু কিছু কোম্পানি বেশি কমিশনের লোভ দেখিয়ে পরে সেই কমিশনের হার কমিয়ে দেয় , তাই যে কোনো কোম্পানির সাথে এফিলিয়েট করার আগে একটু দেখে নেবেন ।

৪. এফিলিয়েট মার্কেটিং বা অন্যান্য সমস্ত অনলাইন কাজে অনিশ্চয়তা বেশি , কারণ প্রতিদিন নতুন নতুন নিয়ম আপডেট হচ্ছে , তাই আজকে আপনার এফিলিয়েট থেকে ভালো ইনকাম করলেও সেটা কাল করতে পারবেন কিনা সেটা তে একটা ঝুঁকি থেকেই যায় ।

একনজরে  : আজকে আমরা  এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্বন্ধে কি কি জানলাম  ? চলুন দেখে নি

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি ?

এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে ?

এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন ?

জনপ্রিয়  কিছু এফিলিয়েট  প্রোগ্রামের নাম  এবং তার সম্বন্ধে বিস্তারিত

এফিলিয়েট মার্কেটিং  কিভাবে এবং  কোথায়  থেকে শিখবো ?

এফিলিয়েট মার্কেটিং  এর  বেশ কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা

আজকের আমাদের এই পোস্ট সম্বন্ধে আপনার যদি আরও কিছু জানার থাকে ,  তাহলে অতি অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আর আমাদের পোস্ট টি ভালো লাগলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে পারেন । 

ধন্যবাদ 

বঙ্গজ্ঞান টীম

শেয়ার করুন:

নমস্কার , বঙ্গজ্ঞান ওয়েবসাইটে আপনাদের স্বাগত , আপনাদের বিভিন্ন বিষয়ে যেমন ব্যবসা , ক্যারিয়ার , কম্পিউটার জ্ঞান , ইন্টারনেট ইত্যাদির উপর আমরা তথ্য নিয়ে আসি প্রতি সপ্তাহে সোমবার এবং শুক্রবার । আমাদের উদ্দেশ্য আপনাদের সবার কাছে বাংলা ভাষায় সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া।

Leave a Comment