ক্রেডিট কার্ড কি ? ক্রেডিট কার্ডের 4 টি বিশেষ সুবিধা

5/5 - (1 vote)

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা অনেক দিনই ধরে ক্রেডিট কার্ড  ব্যবহার করে আসছে , কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যাদের মধ্যে কিছু জন ক্রেডিট কার্ড কি সেটা হয়তো জানে কিন্তু সঠিকভাবে জানেনা , আবার অনেকে আছে যারা ক্রেডিট কার্ড সম্বন্ধে জানেনা । তাই আজকের এই পোস্টে আমরা জেনে নেবো ক্রেডিট কার্ড কি , কিভাবে ক্রেডিট কার্ড এর জন্য আবেদন করা হয় , কাদের কে ক্রেডিট কার্ড এর সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে , ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার কিভাবে করা যায় এবং ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা গুলি কি কি । এইসব কিছুর সম্বন্ধে আপনি জানতে পারবেন এই পোস্ট টি পরে নেওয়ার পর , তাহলে চলুন তাহলে শুরু করা যাক ।

ক্রেডিট কার্ড কি ?

ক্রেডিট কার্ড হলো ঠিক এটিএম (ATM) কার্ড বা ডেবিট কার্ডের মতো  একটি কার্ড , কিন্তু এই দুটি কার্ডের মধ্যে পার্থক্য হলো আমরা যে ATM বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করি সেটা ব্যাঙ্কের সাথে লিংক করা থাকে । তাই আমাদের ব্যাঙ্কে যে পরিমান অর্থ থাকে , ঠিক ততটাই টাকা আমরা খরচ করতে পারি ATM কার্ডের সাহায্যে ।

 এদিকে ক্রেডিট কার্ড যখন কোনো ব্যাঙ্ক দিয়ে থাকে তখন এই কার্ডের মধ্যে একটা লিমিট দিয়ে থাকে যেটা  ২৫ হাজার থেকে শুরু করে ৩ লক্ষ পর্যন্ত যে কোনো একটা ভ্যালুর উপর হতে পারে । আর সেই লিমিট পর্যন্ত টাকা আমরা এক মাসে খরচ করতে পারি । ধরুন আপনার কাছে একটা ক্রেডিট কার্ড আছে যার লিমিট ৬০০০০ টাকা , অর্থাৎ আপনি এক মাসে ৬০০০০ টাকা খরচ করতে পারবেন আপনার ক্রেডিট কার্ড থেকে ।

কাদের কে ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়ে থাকে ?

যদি আপনার কাছে ভালো ইনকাম সোর্স থাকে , অর্থাৎ আপনি ভালো একটা বেতনের চাকরি করেন কিংবা আপনি একটি ভালো ব্যবসা করেন এবং তার সাথে আপনার সিভিল স্কোর (Cibil Score ) যদি ভালো থাকে , তাহলে আপনি ক্রেডিট কার্ড পাবেন ।

ক্রেডিট কার্ড এর জন্য কিভাবে আবেদন করা হয় ?

আপনারা ক্রেডিট কার্ড কি সেটা তো জানতে পারলেন , কিন্তু এই ক্রেডিট কার্ডের জন্য কিভাবে এবং কোথায় আবেদন করতে হয় সেটা দেখে নেওয়া যাক । আসলে ক্রেডিট কার্ড এর জন্য আবেদন করতে গেলে আপনি অনলাইন ও অফলাইন দুই ভাবে আবেদন করতে পারেন । আপনি যে ব্যাঙ্কের থেকে ক্রেডিট কার্ড নিতে চাইছেন , সেই ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনি অনলাইনে আবেদন করতে পারেন । এছাড়া আপনি সরাসরি আপনার ব্যাঙ্কে গিয়ে ফর্ম ফিলাপ করে আবেদন করতে পারেন । যখন আপনি ক্রেডিট কার্ড এর জন্য আবেদন করেন ঠিক তার এক মাসের মধ্যে আপনার বাড়ির ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয় ।

ক্রেডিট কার্ড কি ও এর  ব্যবহার কিভাবে করা হয় ?

যখন ব্যাঙ্ক আপনাকে ক্রেডিট কার্ড Issue করে থাকে , তখন ব্যাঙ্ক আপনার ক্রেডিট কার্ডে একটা লিমিট সেট করে দেয় , যেটা ২৫ হাজার থেকে শুরু করে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে , যেটা আবার সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকে । ধরুন আপনার নামে একটা ক্রেডিট কার্ড Issue করা হয়েছে যার লিমিট ৫০ হাজার টাকা , সেটা পরে গিয়ে ৭০ হাজার টাকা হবে । আসলে ব্যাঙ্ক আপনাকে যে লিমিট সেট করে দেয় সেই লিমিট পর্যন্ত আপনি অনলাইন পেমেন্ট , অনলাইন শপিং কিংবা এটিএম মেশিন থেকে ক্যাশ Withdraw করতে পারেন । তবে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ক্যাশ Withdraw না করাই ভালো , কারণ এতে ব্যাঙ্ক Penalty চার্জ করে থাকে ।

মেশিন লার্নিং কি

ক্রেডিট কার্ড এর সুবিধা 

সাধারণত একটা ক্রেডিট কার্ড এর বেশ কিছু সুবিধা থাকে , সবচেয়ে বড়ো সুবিধা হলো যে আমাদের যদি কখনো হটাৎ করে টাকার খুব দরকার  পরে তখন আপনি অপার পরিচিত বা বন্ধু দের কাছে না চেয়ে এই ক্রেডিট কার্ড এর সাহায্যে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় অর্থ Withdraw করতে পারেন , এবং ১ মাস পরে আপনি সেই টাকা টা EMI এর সাহায্যে বা একবারে পেমেন্ট করে দিতে পারেন ।

যখন আপনি ক্রেডিট কার্ড এর সাহায্যে অনলাইন শপিং করেন বা কোনো অনলাইন পেমেন্ট করেন তখন আপনি কিছু Reward পয়েন্ট বা কিছু ক্যাশব্যাক পেতে পারেন , এছাড়া অনেক সময় ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করার জন্য বেশ কিছু টাকার ছাড় পাওয়া যায় ।

ক্রেডিট কার্ড এর অসুবিধা 

যেরকম ক্রেডিট কার্ড এর বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে ঠিক তেমন ক্রেডিট কার্ড এর বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে ।

  • যদি আপনি ক্রেডিট কার্ড এর টাকা ফেরত বা বিল পেমেন্ট Due Date এর পরে করেন বা ভুলে যান , তাহলে ব্যাঙ্ক আপনার কাছে বেশ ভালোরকম Penalty চার্জ করে থাকে ।
  • যদি আপনি ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ATM মেশিনে দিয়ে ক্যাশ Withdraw করেন , তাহলে ক্যাশ Withdraw করার দিন থেকে আপনার উপর Penalty চার্জ করা শুরু হয়ে যায় , এই Penalty ততক্ষন চলে যতক্ষণ আপনি Withdraw করা টাকা জমা করছেন ।
  • যদি  কার্ড টি হারিয়ে যায় , এবং কেউ সেই কার্ড দিয়ে International ট্রানসাকশান করে নেয় , সেক্ষেত্রে আপনি কোনো OTP ও পাবেন না । শুধু মাত্র ক্রেডিট কার্ড নম্বর ও ক্রেডিট কার্ড এর পেছনে থাকা CVV নম্বর দিয়ে যে কেউ ডাইরেক্ট পেমেন্ট করতে পারে  কোনোরকম OTP ছাড়াই , OTP শুধুমাত্র National ট্রানসাকশান এর ক্ষেত্রে আসে । অর্থাৎ ক্রেডিট কার্ড হারিয়ে গেলে যে কেউ এর অপব্যবহার করতে পারে ।
  • ক্রেডিট কার্ড এর একটা বড়ো অসুবিধা হলো অনেক বাজে খরচ আপনি না চাইতেও হয়ে যায় , যেমন ধরুন আপনার কিছু জিনিস কেনার ইচ্ছা করছে সেটা হয়তো আপনার খুব একটা দরকার নয় , কিন্তু আপনার মাইন্ডসেট রয়েছে যে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কিনে নি , তাহলে এখন কোনো টাকা লাগবে না , পরে সেটা EMI তে দেওয়া যাবে , ফলে অনেক বাজে খরচ হয়ে যায় ।

চ্যাট জিপিটি কি? (chat gpt ki ?) চ্যাট জিপিটি কিভাবে কাজ করে ? মাত্র ৫ টি সহজ স্টেপে

ক্রেডিট কার্ড এর বিল কিভাবে আসে 

যখন আমরা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কোনো শপিং করি বা কোনো পেমেন্ট করি , তখন কিছু দিন পর ক্রেডিট কার্ড এর বিল আসে , এবং বিল আসার পর সেই বিল টার পেমেন্ট করার জন্য ১৫-২০ দিনের সময় থাকে , আবার অনেক সময় ৩০ দিন এর ও সময় থাকে ।

ক্রেডিট কার্ড এর বিল আমাদের ব্যাঙ্কিং পোর্টাল এ শো করে , আবার অনেক সময় আমাদের বাড়ির ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয় । সেই বিল এর মধ্যে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া থাকে , যেমন আপনি কোথায় কত টাকা খরচ করেছেন কোন তারিখে করেছেন , ব্যাঙ্ক ইন্টারেস্ট ও penalty ইত্যাদি । 

এই বিল এর একটি নির্দিষ্টি Due Date থাকে ,  সেই Due Date এর মধ্যে আপনাকে পেমেন্ট করতে হবে । পেমেন্ট করার জন্য আপনাকে দুটো অপসন দেওয়া হয়ে থাকে একটা হলো minimum যে Amount টা থাকবে , আর দ্বিতীয় টি হলো আপনি সম্পূর্ণ Amount পেমেন্ট করতে পারেন ।

আমি বলবো আপনারা সবসময় সম্পূর্ণ Amount পেমেন্ট করবেন, অন্যথায় আপনি যদি Minimum Amount যদি পেমেন্ট করেন তাহলে বাকি টাকার উপর ইন্টারেস্ট ও Penalty লাগবে ।

ক্রেডিট কার্ড এর বিল এর পেমেন্ট কিভাবে করা হয় 

ক্রেডিট কার্ড এর বিলে Repayment আপনি সরাসরি আপনার নেট ব্যাঙ্কিং এর সাহায্যে করতে পারেন , UPI এর মাধ্যমে করতে পারেন কিংবা আপনি আপনার ব্যাঙ্কে গিয়ে এই বিল এর পেমেন্ট করতে পারেন ।

আমরা ক্রেডিট কার্ড এর বেশ কিছু সুবিধা ও অসুবিধা সম্বন্ধে জানলাম , যদি আপনারা সময় মতো ক্রেডিট কার্ড এর বিল এর পেমেন্ট করে দেন তাহলে এর অনেক সুবিধা রয়েছে ।

যদি আপনার কাছে একটা ভালো চাকরি থাকে  কিংবা আপনার ব্যবসা ভালো চলছে তাহলে আপনি একটা ক্রেডিট কার্ড নিতে পারেন এবং এর সুবিধা গুলি উপভোগ করতে পারেন ।

মিউচুয়াল ফান্ড কি

একনজরে : আজকে এই পোস্ট থেকে আমরা কি কি জানলাম 

প্রথমে আমরা জানলাম যে ক্রেডিট কার্ড কি এবং এই ক্রেডিট কার্ড কি ও কাদের কে দেওয়া হয়ে থাকে ও ক্রেডিট কার্ড এর জন্য কিভাবে আবেদন করতে হয়, তারপর আমরা জানলাম এই ক্রেডিট কার্ড কিভাবে ব্যবহার করতে হয় এবং ক্রেডিট কার্ড এর কি কি সুবিধে এবং অসুবিধে আছে। 

আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে আপনি ক্রেডিট কার্ড কি নিয়ে  যাবতীয় তথ্য জানতে পেরেছেন , এছাড়া ক্রেডিট কার্ড কি বা এই বিষয়ে  আরো কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনাদের কমেন্ট আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান যেখান থেকে আমরা আরো মোটিভিশন পাই। 

আমাদের আজকের এই পোস্ট টি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই  আপনাদের প্রিয়জন বা বন্ধু দের  সাথে  শেয়ার করতে পারেন।  আর এরকম নিত্যনতুন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ব্লগের সাথে যুক্ত থাকুন, এবং আমাদের সহযোগিতা করতে থাকুন। 

ধন্যবাদ 

বঙ্গজ্ঞান টিম

শেয়ার করুন:

নমস্কার , বঙ্গজ্ঞান ওয়েবসাইটে আপনাদের স্বাগত , আপনাদের বিভিন্ন বিষয়ে যেমন ব্যবসা , ক্যারিয়ার , কম্পিউটার জ্ঞান , ইন্টারনেট ইত্যাদির উপর আমরা তথ্য নিয়ে আসি প্রতি সপ্তাহে সোমবার এবং শুক্রবার । আমাদের উদ্দেশ্য আপনাদের সবার কাছে বাংলা ভাষায় সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া।

Leave a Comment