ই কমার্স কি ? নিজের একটা ই কমার্স ব্যবসা শুরু করতে চান ? সহজ ৮ টি উপায়

5/5 - (1 vote)

বর্তমানে এমন মানুষ খুব কম আছে যারা অনলাইনে কিছু কেনা কাটা করে না , সকলেই কম বেশি অনলাইনে কেনা কাটা করেই থাকে , আর করোনা মহামারীর পর থেকে এই পরিমান তিন গুন্ বেড়ে গেছে । এই অনলাইন শপিং এর জন্য মানুষ তাদের পছন্দের জিনিস পত্র ঘরে বসেই কয়েকটি ক্লিক করেই পেয়ে যাচ্ছে  , আর এই সম্পূর্ণ প্রসেস টা কে আমরা ই কমার্স বলে থাকি ।

আজকের এই পোস্টে ই কমার্স কি এবং ই কমার্সের বিভিন্ন মডেল এবং আপনি যদি নিজের একটা ই কমার্স ব্যবসা শুরু করতে চান তার জন্য কি কি স্টেপ বা ধাপ মেনে চলতে হবে সেইসব কিছু সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করবো ।

 

ই কমার্স কি ?

“ ই কমার্স ” (e -commerce) কথাটির মধ্যে দুটো আলাদা আলাদা শব্দ রয়েছে যেখানে ই মানে হলো ইলেকট্রনিক বা ইন্টারনেট আর কমার্স মানে বাণিজ্য । ই কমার্স কে অনেক সময় ইলেকট্রনিক কমার্স বা ইন্টারনেট কমার্স বলা হয় । সাধারণত ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোনো পণ্য কেনা বেচা এবং বিভিন্ন লেনদেন করাকে ই কমার্স বলা হয় ।

ই কমার্স হলো একটি অনলাইন ব্যবসা যেখানে একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন বিক্রেতা অর্থাৎ Seller বিভিন্ন ক্রেতা অর্থাৎ Buyer এর কাছে তাদের পণ্য বা প্রোডাক্ট নিয়ে পৌঁছাতে পারে । 

  ** ১১ অগাস্ট ১৯৯৪ সালে প্রথম আমেরিকার একজন ব্যক্তি তার Netmarket ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তার বন্ধুর কাছে একটি CD বিক্রি করেছিলেন ।

ই কমার্স ব্যবসার মডেল হিসেবে ই কমার্স কে সাধারণত ৪ টি  ভাগ করা হয়, যেমন

» ব্যবসা থেকে উপভোক্তা ( Business to Consumer or B2C)

যখন একটি ব্যবসা অর্থাৎ ব্যবসায়ী একজন উপভোক্তা বা কনসিউমার অর্থাৎ কোনো একটি গ্রাহক কে একটি মাত্র পণ্য বা কোনো পরিষেবা বিক্রি করে , উদাহরণ স্বরূপ আপনি একটি কাপড় কোনো একটি খুচরো বিক্রেতার কাছে থেকে কিনলেন ।

» ব্যবসা থেকে ব্যবসা (Business to Business or B2B)

যখন একটি ব্যবসা অন্য কোনো ব্যবসা কে কোনো কিছু বিক্রি করে , উদাহরণ স্বরূপ কোনো একটি আইটি কোম্পানি কোনো একটি কোম্পানি কে একটা সফটওয়্যার বা কোনো নতুন টেকনোলজি বিক্রি করলো । 

» উপভোক্তা থেকে উপভোক্তা (Consumer to Consumer)

যখন একজন উপভোক্তা অন্য একজন উপভোক্তা কে নিজের জিনিস বিক্রি করে , উদাহরণ স্বরূপ আপনি যখন আপনার পুরোনো কোনো জিনিস Olx , Quikr এর মাধমে অন্য কাউকে বিক্রি করে থাকেন । 

» উপভোক্তা থেকে ব্যবসা (Consumer to Business)

যখন একজন উপভোক্তা কোনো পণ্য বা পরিষেবা কোনো ব্যবসা কে বিক্রি করে , উদাহরণ স্বরূপ আপনি কোনো কনটেন্ট লিখলেন কিংবা কোনো ফটো এডিটিং করে কোনো কোম্পানি কে বিক্রি করলেন । 

ই কমার্স সাধারণত এই চারটি মডেলের উপর কাজ করে থাকে , আপনি ই কমার্স ব্যবসা শুরু করার আগে এই মডেল গুলো জানা টা অত্যন্ত জরুরি । 

১. কিভাবে ই কমার্স ব্যবসা শুরু করবো ? 

একটা ব্যবসা শুরু করা এবং তার উপর একটা ই কমার্স ব্যবসা শুরু করা খুব একটা সহজ কাজ নয় , অনেক হার্ডওয়ার্ক ও বেশ কিছু ধাপ বা স্টেপস কে ফলো করার পরেই একটি ই কমার্স ব্যবসায় সফল হওয়া যায় । 

ই কমার্স কি

আপনি একবার ভাবুন যে আমরা কেন ই কমার্স ব্যবসা এর কথা বলছি , মাইক্রোসফট এর কো ফাউন্ডার বিল গেটস একটি কনফারেন্সে বলেছিলেন যে যদি আপনার ব্যবসা ইন্টারনেটে উপলব্ধ নেই তাহলে আপনার ব্যবসা কোনো ব্যবসাই নয় । আমাজন , ফ্লিপকার্ট এর মতো ই কমার্স ওয়েবসাইট গুলি সবাই কে দেখিয়ে এবং বুঝিয়ে দিয়েছে যে এটাই হলো ব্যবসার ভবিষৎ , এবং এরা ই কমার্স মার্কেটের উপর Deep Research ও Experiment করে এবং ব্যবসা শুরু করে , আর বর্তমানে এই কারণে আজকে এরা এতো বড়ো ই কমার্স প্লাটফর্ম । যদি আপনারা এখনো বুঝতে পারছেন না যে কিভাবে এই ব্যবসা শুরু করবেন , তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক ৮ টি সহজ ধাপ বা স্টেপস । 

১.১. একটি নিখুঁত ব্যবসা পরিকল্পনা এবং মডেল তৈরি করুন

যে কোনো ব্যবসার শুরুতে আপনাকে যে কাজ টা প্রথমে করা উচিত সেটা হলো নিজের ব্যবসার একটি মডেল ও পরিকল্পনা তৈরী করা এবং সেটাকে খুঁটিয়ে দেখা , কারণ ই কমার্স ব্যবসা কোনো শিল্প নয় , এই ব্যবসা সম্পূর্ণ প্ল্যানিং অর্থাৎ পরিকল্পনা দ্বারা চলে । ই কমার্স ব্যবসায় আপনি দুই ধরণের ব্যবসার মডেল পাবেন এক হলো 

আপনি Single Vendor Store বানাতে পারেন ,  আর তা নাহলে আপনি Multi Vendor E-Commerce Store বানাতে পারেন । এটা আপনি আপনার বাজেট এর হিসেবে নির্বাচন করতে পারেন ।

১.১.১. Single Vendor Store

যদি আপনার কাছে বাজেট কম থাকে তাহলে আপনি Single Vendor Store খুলতে পারেন , Single Vendor Store অর্থাৎ যে কোনো এক ধরণের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস আপনার ই কমার্স ওয়েবসাইটে বিক্রি করা । এখানে আপনার সেটআপ বা Administrative খরচ অনেকটা কম পরে এবং আপনার হাতে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে । যদি আপনি নিজের প্রোডাক্ট বিক্রি করতে চান তাহলে আপনি এই Single Vendor Store বিকল্প টি বেছে নিতে পারেন ।

 

সেরা ১০ টি কম ইনভেস্টমেন্ট ব্যবসার আইডিয়া (Low Investment Business ideas in Bengali)

 

১.১.২. Multi Vendor Store 

এখানে বেশ কিছু বিক্রেতা বা Sellers আলাদা আলাদা প্রোডাক্ট একটা ই কমার্স সাইটে বিক্রি করে থাকে , এটারও কিছু সুবিধা আছে যেমন বড়ো প্লাটফর্ম হওয়ার দরুন এখানে লাভের পরিমান ও বেশি , এছাড়া সবাই একটা প্লাটফর্মের মধ্যে সমস্ত প্রোডাক্ট পেয়ে যায় , তাই স্বাভাবিকভাবে কাস্টমার বৃদ্ধি পায় । এইসব ছাড়াও এখানে একটি বড়ো সুবিধা হলো আপনার একজন Seller কোনো কারণবশত আপনার কাস্টমার কে প্রোডাক্ট না দিতে পারলো , তখন অন্যান্য Seller আপনার কাস্টমার কে সেই প্রোডাক্ট ডেলিভারি করবে , এতে আপনাকে একজন Sellerএর উপর নির্ভর থাকতে হবে না এবং আপনার কাস্টমার এর বিশ্বাস বাড়বে ।

 

১.২. নিজের ব্যবসা কে একটি ব্র্যান্ড নাম দিন

যখন আপনি ঠিক করে নিয়েছেন যে কোন মডেলের ব্যবসা শুরু করবেন , এবং নিজের Sellers ও প্রোডাক্টের লিস্ট তৈরী করে নিয়েছেন । তাহলে এরপর আপনাকে ব্যবসার জন্য একটি নাম ঠিক করতে হবে , তবে ব্যবসার নাম ঠিক করার আগে আপনাকে একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে আপনাকে একটা ব্র্যান্ড এর নাম বেছে নিতে হবে । আপনার ব্যবসার জন্য নাম নির্বাচন করার আগে কয়েকটি জিনিস খেয়াল রাখতে হবে , যেমন

  • আপনার ব্যবসার নাম টা যেন ছোটো হয় , যাতে সবাই খুব সহজেই মনে রাখতে পারে ।
  • এমন একটা নাম রাখতে হবে যেটা আপনার ব্যবসাকে প্রতিফলিত বা Reflect করে ।
  • এছাড়া নাম টা যাতে ইউনিক হয় এবং সেই নামের মানে কোনো ভাষায় আলাদা কোনো মানে না থাকে ।
  • সবশেষে আপনাকে একটি লোগো বানিয়ে নিতে হবে যেটা আপনার কোম্পানির লোগো হিসেবে পরিচিত হবে । আপনি চাইলে আপনার ব্যবসার নামের প্রথম অক্ষরের সাথে লোগো বানাতে পারেন , যেমন আমাজন , ফ্লিপকার্ট । 

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি ? এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো ?

 

১.৩. আপনার Company Type বা ব্যবসার ধরণ ঠিক করা

ব্যবসা শুরু করার পর সেটাকে কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশন করতে প্রতিটা দেশের নিজস্ব কিছু নিয়ম থাকে , ভারতে সাধারণত চার ধরণের কোম্পানি হয়ে থাকে যেমন 

  • Sole Proprietorship
  • One person Company
  • Limited Liability Partnership
  • Private limited Company

এইসব কোম্পানির ধরণ গুলির আলাদা আলাদা কিছু নিয়ম ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে । আপনি যদি একা ব্যবসা শুরু করতে চান বা আপনি একজন পার্টনার নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চান কিংবা আপনি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি শুরু করতে চান , সেটা সম্পূর্ণ আপনার নির্ভর করবে , এবং সেই অনুযায়ী এই কোম্পনির ধরণ গুলি নির্ধারিত হবে ।

শুধুমাত্র ই কমার্স ব্যবসার জন্য নয় আপনি যে কোনো ব্যবসা শুরু করতে গেলে এইগুলো ব্যবসার অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়ায় । তবে এর জন্য আপনি কোনো CA (Chartered Accountant ) বা কোনো কন্সালটেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ।

 

১.৪. নিজের ই কমার্স ব্যবসা এর জন্য রেজিস্ট্রেশন করুন

ব্যবসার নাম ,  লোগো ও কোম্পানি টাইপ বা ধরণ বেছে নেওয়ার পর আপনাকে নিজের ব্যবসার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে , যেটা একটা ব্যবসার মূল অংশ । যদি আপনি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি তে আপনার ব্যবসা রেজিস্ট্রেশন করতে চান তাহলে সবচেয়ে প্রথমে আপনাকে Ministry of Corporate Affairs এর অনলাইন ওয়েবসাইটে গিয়ে ফর্ম ফিলাপ করে DIN ( Director Identification Number) এর জন্য আবেদন করতে হবে । এর জন্য আপনার কাছে PAN CardDSC (Digital Signature Certificate) থাকা টা দরকার । এরপর যখন আপনি DIN পেয়ে যাবেন তখন আপনাকে আপনার কোম্পানির নাম টি ইতিমধ্যে কি Ministry Of Corporate Affairs এ রেজিস্টার আছে কিনা সেটা দেখার জন্য অনলাইনে ROC ( Registrars Of Companies)  এর জন্য ফর্ম ফিলাপ করতে হবে । 

 

কিভাবে ব্যবসা শুরু করব সহজ ১২ টি উপায়ে

 

এরপর আপনার ব্যবসার নাম confirm হয়ে গেলে আপনাকে ৬ মাস সময় নেওয়া হবে রেজিস্ট্রেশন এর সম্পূর্ণ প্রসেস সম্পন্ন করতে , এরপর আপনাকে বেশ কিছু জিনিসের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে ,যেমন GST ((Goods and Service Tax) রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট , ট্রেড লাইসেন্স বা Establishment License , PF  বা Provident Fund , ESIC বা Employees’ State Insurance Corporation ইত্যাদি । এইসব কিছু রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাওয়ার পর আপনি Certificate Of Incorporation এর জন্য অনলাইনে Ministry Of Corporate Affairs এর জন্য আবেদন করতে পারেন । 

 

১.৫. একটি ব্যাঙ্ক একাউন্ট খুলুন

একবার যখন আপনার কোম্পানি Ministry Of Corporate Affairs এ রেজিস্টার হয়ে যাবে , তারপর আপনার কোম্পানির নামে একটা ব্যাঙ্ক একাউন্ট খুলতে হবে । আপনি আপনার সুবিধামতো যে কোনো ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারেন , এটি যেহেতু একটি ই কমার্স ব্যবসা অর্থাৎ অনলাইন ব্যবসা তাই এখানে অনলাইনে টাকা পয়সার লেনদেন তো হবেই , তাই আপনার সুবিধা অনুযায়ী যে কোনো ব্যাংকে একটা একাউন্ট খুলে নিতে পারেন ।

১.৬. একটি ই কমার্স ওয়েবসাইট বানান

সমস্ত কিছু হয়ে যাওয়ার পর অবশেষে আপনাকে একটা ওয়েবসাইট বানাতে হবে , আপনার যদি ওয়েব ডিজাইনিং এর কাজ না জানা থাকে ও এর উপর যদি খুব সামান্য অভিজ্ঞতা থাকে , তাহলে আপনি নিজেই বিভিন্ন Pre-Built Platform ( যেমন WordPress, Wix)  এর সাহায্যে একটি ই কমার্স ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারবেন । এই Pre-Built Platform এ আপনি নানা ধরণের Template পেয়ে যাবেন , সেখানে আপনার পছন্দ মতো যে কোনো একটি ডিজাইন বেছে নিয়ে আপনি আপনার ই কমার্স ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারবেন ।

 

ওয়েব ডিজাইন কি ? কিভাবে একজন ওয়েব ডিজাইনার হওয়া যায় ?

 

এছাড়া আপনি বিভিন্ন Scratch Website (যেমন WooCommerce, Magento , Zepo, Shopify )  এর সাহায্যে আপনি ই কমার্স ব্যবসা শুরু করতে পারেন । এবার আপনাকে নির্বাচন করতে হবে যে আপনি কার সাহায্যে নিজের ই কমার্স ওয়েবসাইট বানাবেন , কারণ এটা এমন একটা ব্যবসা যা আপনার ওয়েবসাইটের উপর নির্ভর করবে , তাই ভালোভাবে চিন্তাভাবনা করে সঠিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েই তবে ওয়েবসাইট বানাবেন , তাতে ১ মাস বেশি সময় লাগলেও সেটা ভালো ।

** তবে আপনার ই কমার্স ওয়েবসাইট শুরু করার আগে আপনাকে কিছু জিনিস অতি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে 

  • ১. প্রথমে আপনাকে এটা ঠিক করতে হবে যে আপনি আপনার ওয়েবসাইট কে নিজে হোস্ট করবেন অর্থাৎ ওয়েবসাইটে নিজেই সমস্ত কাজ করবেন , না এই কাজের জন্য কোনো Professional কাউকে রাখবেন যে আপনার ওয়েবসাইট কে ম্যানেজ করবে ।
  • ২. আপনাকে দেখতে হবে যে আপনার ওয়েবসাইটে প্রতি দিন যে পোস্ট গুলি করা হচ্ছে,  সেখানে প্রোডাক্টের বিস্তারিত তথ্য , ছবি এবং বিভিন্ন অফার ঠিকঠাক দেওয়া হচ্ছে কিনা ।

 

ক্রিপ্টোকারেন্সি কি ? cryptocurrency in bengali

 

১.৭. পেমেন্ট গেটওয়ে তৈরী করুন (Make a Payment Gateway)

আপনার ওয়েবসাইট তৈরী হয়ে যাওয়ার পর আপনার ব্যবসা কে আরও লাভজনক ও জনপ্রিয় বানানোর জন্য আপনাকে একটি Payment Gateway তৈরী করতে হবে , এবং তাতে জনপ্রিয় সকল Payment Option রাখতে হবে , যেমন ডেবিট কার্ড , ক্রেডিট কার্ড , ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং , UPI ও Cash On Delivery ইত্যাদি । এছাড়া আরও কিছু জনপ্রিয় পেমেন্ট গেটওয়ে রয়েছে যেমন Paypal, PayU ও Razorpay ইত্যাদি ।

আপনার অনলাইন ওয়েবসাইটে Payment Gateway যুক্ত করার জন্য আপনাকে কিছু Documents জমা করতে হবে , যেমন

  • Bank Account 
  • Pan Card 
  • CIN (Certificate Of Incorporation)
  • MOA(Memorandum Of Association)
  • AOA(Article Of Association)
  • Identity Proof
  • Address Proof
  • Website Terms and Conditions
  • Website Privacy Policy

এই সমস্ত কিছু Documents জমা হওয়ার পর যখন আপনার Payment Gateway টি Approve হয়ে যাবে , তখন আপনি আপনার ওয়েবসাইটে Online Payment System শুরু করতে পারেন ।

 

ডিজিটাল মার্কেটিং কি ? ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শিখব ? সম্পূর্ণ তথ্য

 

১.৮. লজিস্টিকস বা ডেলিভারি এর সুবিধা 

একটা ই কমার্স ব্যবসা সফল ভাবে শুরু করার জন্য এই ধাপ বা স্টেপ টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ , Logistics  এর মানে হলো কোনো কাস্টমার বা গ্রাহক কে তাদের অর্ডার করা জিনিস তাদের কাছে ঠিকঠাক ভাবে পৌঁছে দেওয়া , এছাড়া Logistic কোম্পানি গুলি অর্ডার করা জিনিস টির উপর নজর রাখে , যাতে কাস্টমার অর্ডার করার পর থেকে অর্ডার পাওয়া পর্যন্ত জিনিস টিকে ট্র্যাক করতে পারে , যে তার অর্ডার কোথা থেকে আসছে , এখন কোথায় আছে , কবে ডেলিভারি হবে ইত্যাদি । এর ফলে কাস্টমার দের সেই ওয়েবসাইটের উপর বিশ্বাস ও ভরসা বেড়ে যায় ।

২. ই কমার্স মার্কেটিং (E-Commerce Marketing)

ই কমার্স ব্যবসা এর জন্য যাবতীয় সব কাজ সমস্ত সেটআপ তো করলেন , কিন্তু যতক্ষণ না আপনার ওয়েবসাইটে কাস্টমার বা ট্রাফিক আসবে ততক্ষন তো আপনার ওয়েবসাইট টি অচল , তাই এর জন্য সঠিক ভাবে ই কমার্স মার্কেটিংকরতে হবে । তাহলে চলুন এবার দেখে নি ই কমার্স মার্কেটিং কিভাবে করবেন অর্থাৎ কিভাবে কাস্টমার কে আপনার ওয়েবসাইটের উপর আকৃষ্ট করবেন ।

আপনি যদি ভেবে থাকেন যে ওয়েবসাইট খোলার সাথে সাথেই আপনি প্রচুর কাস্টমার ও অর্ডার পাবেন , তাহলে এটা আপনার ভুল ধারণা । যদি আপনি ই কমার্স ব্যবসা তে সফল হতে চান , তাহলে প্রথমে আপনাকে ট্রাফিক অর্থাৎ কাস্টমার নিয়ে আসতে হবে আপনার ওয়েবসাইটে , আর এই ট্রাফিক বা কাস্টমার আনার জন্য আপনাকে বেশ কিছু স্টেপ বা ধাপ মেনে কাজ করতে হবে ।

ই কমার্স কি

২.১. এসসিও মার্কেটিং (SEO Marketing )

যে কোনো অনলাইন ব্যবসার জন্য আজকাল সারা বিশ্বে Search Engine Optimization(SEO) ব্যবহার করা হচ্ছে , যদি আপনি আপনার কাস্টমার দের আপনার ওয়েবসাইটে আনতে চান তাহলে আপনাকে এই SEO Strategy বা কৌশল ব্যবহার করতে হবে । যখন আমরা ওয়েব ব্রাউজার এর মধ্যে কোনো সার্চ ইঞ্জিনে কিছু সার্চ করি তখন যেটা সবার প্রথমে রেজাল্ট আসে বা দ্বিতীয় রেজাল্ট আসে সেটাতেই আমরা সবাই ক্লিক করি , তাছাড়া বেশিরভাগ মানুষ এইটাই করে থাকে , খুব কম সংখক মানুষ তৃতীয় বা চতুর্থ সার্চ রেজাল্টে যায় । আর সার্চ রেজাল্টে প্রথমে আসার জন্য আপনাকে SEO সাহায্য করে । তাই আপনাকে খুব ভালো করে আপনার ওয়েবসাইটের SEO করতে হবে ।

 

  • ওয়েব ব্রাউজার কি ? কিভাবে ওয়েব ব্রাউজার কাজ করে ?

 

২.২. সঠিক কীওয়ার্ড নির্বাচন করুন(Choose Right Keywords)

গুগল থেকে পাওয়া তথ্যের হিসেবে শুধু মাত্র গুগল সার্চ ইঞ্জিনে ১ মিনিটে প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন এর বেশি সার্চ করা হয় ,  ওয়েবসাইট কে এই সার্চের মধ্যে নিয়ে আসতে চান , তাহলে আপনাকে কিছু ভালো কীওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে । এর জন্য আপনি বেশ কিছু Keyword Research Tool রয়েছে যার সাহায্যে আপনি আপনার প্রয়োজন মতো কীওয়ার্ড খুঁজে নিয়ে আপনার ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে পারেন । যেমন Google Keyword Planner, Keywordtool.io , Keyword Dominator, SEMRUSH , Ahrefs ইত্যাদি ।

২.৩. Advertisement (বিজ্ঞাপন )

বিজ্ঞাপন হলো একটা সেরা উপায় যার দ্বারা আপনি আপনার কাস্টমার এর সামনে আপনার ওয়েবসাইট এবং আপনার প্রোডাক্ট কে নিয়ে আসতে পারেন । এর জন্য আপনাকে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটে যেমন ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে আপনি Paid Advertisements করতে পারেন , এতে আপনি খুব তাড়াতাড়ি মোটামুটি একটা ভালো রেজাল্ট দেখতে পাবেন।

একবার আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আসতে থাকলে এরপর আপনার প্রথম কাজ হলো সেই কাস্টমার কে ধরে রাখা বিভিন্ন অফার ও ডিল এর মাধ্যমে ।

২.৪. পুরোনো কিছু উপায়

যদি আপনার কাছে সেরকম ব্যয়বহুল Paid Advertisement ব্যবহার করার মতো  বাজেট নেই , তাহলে আপনি কিছু পুরোনো উপায় ব্যবহার করতে পারেন , যেমন নিউসপেপার এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়া , কিংবা আপনার কাছে ইতিমধ্যে যত কাস্টমার রয়েছে তাদের বলুন তাদের পরিবার ও বন্ধবান্ধব দের সাথে আপনার ওয়েবসাইট সুপারিশ করতে ।

এছাড়া আপনি প্রফেশনাল ব্লগার ও ইউটিউবার দের বলতে পারেন , যে তারা আপনার ওয়েবসাইট সম্বন্ধে তাদের ব্লগ পোস্টে লিখুক এবং ইউটিউব ভিডিও বানাক , এইভাবে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক নিয়ে আসতে পারবেন ।

 

কীভাবে একজন সফল ইউটিউবার হওয়া যায় ? সেরা ১৫ টি টিপস

 

একনজরে : আজকের এই পোস্ট থেকে আমরা কি কি জানালাম ?

প্রথমে জানলাম ই কমার্স কি ? ই কমার্স কয় প্রকার ও কি কি ?

তারপরে জানলাম কিভাবে আপনি একটা ই কমার্স ব্যবসা শুরু করতে পারবেন ? তার সহজ ৮ টি স্টেপ 

তারপরে জানলাম কিভাবে ই কমার্স মার্কেটিং করবেন ?

 

বর্তমান সময়ে একটি ই কমার্স ব্যবসা শুরু করা আপনার জন্য সেরা একটি ব্যবসার আইডিয়া হতে পারে , আর এই ব্যবসার ভবিষৎ রয়েছে । আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে আপনারা ই কমার্স কি ? এবং কিভাবে ই কমার্স ব্যবসা শুরু করবেন সেইসব জানতে পেরেছেন । এই পোস্ট যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অতি অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন , আর ই কমার্স সম্বন্ধে কিছু জানার হলে সেটাও আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন ।

আমরা সব সময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য সঠিক তথ্য নিয়ে আসার , আমাদের সবসময় একটাই লক্ষ্য থাকে যে বাংলা ভাষার মানুষেরা যাতে নিজের ভাষায় তাদের তথ্য জানতে পারে , তাই এর জন্য চাই আপনাদের সহযোগিতা । আপনাদের সহযোগিতা পেলে আমরা এই ব্লগ টিকে অনেক বড়ো করতে পারবো , তাই আমাদের সহযোগিতা করতে থাকুন এবং  এইরকম নিত্য নতুন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ব্লগের সাথে যুক্ত থাকুন ।

ধন্যবাদ 

বঙ্গজ্ঞান টীম  

শেয়ার করুন:

নমস্কার , বঙ্গজ্ঞান ওয়েবসাইটে আপনাদের স্বাগত , আপনাদের বিভিন্ন বিষয়ে যেমন ব্যবসা , ক্যারিয়ার , কম্পিউটার জ্ঞান , ইন্টারনেট ইত্যাদির উপর আমরা তথ্য নিয়ে আসি প্রতি সপ্তাহে সোমবার এবং শুক্রবার । আমাদের উদ্দেশ্য আপনাদের সবার কাছে বাংলা ভাষায় সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া।

2 thoughts on “ই কমার্স কি ? নিজের একটা ই কমার্স ব্যবসা শুরু করতে চান ? সহজ ৮ টি উপায়”

Leave a Comment